ন্যাভিগেশন মেনু

ঈশ্বরদীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই


পাবনার ঈশ্বরদীর পদ্মানদীতে টানা বর্ষণ আর উজানের ঢলে হু হু করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টের পদ্মানদীতে বিপদসীমার মাত্র ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৮ সেন্টিমিটার। বৃহস্পতিবার এই পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৪ দশমিক ৯ মিটার। শুক্রবার বেড়ে হয়েছে ১৪ দশমিক ১৭ মিটার। ফলে পদ্মার পানি এখন বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই।

শনিবার (২১ আগস্ট) পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন আজকের বাংলাদেশ পোস্টকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এই পয়েন্টে পানির উচ্চতা এখন ১৪ দশমিক শূন্য ৯ মিটার। পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমা ১৪ দশমিক ২৫ মিটার। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

শনিবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি স্প্যানের নিচে এখন পানিতে পরিপূর্ণ। নদী শাসন বাঁধ পর্যন্ত (গাইড ব্যাংক) পানি পৌঁছে গেছে। অথচ এক মাস আগেও ১৫টি স্প্যানের ৮টির নিচেই পানি ছিল না। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে অস্থায়ী যে দোকানপাট গড়ে উঠেছিল, সেগুলোও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। প্রমত্তা পদ্মার তীব্র স্রোত ও পানির তীব্রতা দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ পদ্মা পাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন।

এদিকে পানি বাড়ায় পদ্মার চরে জেগে উঠা উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের সাহেবনগর ও মোল্লার চরের বসতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। স্রোতের তীব্রতায় চরের অধিকাংশ ফসলি জমি ডুবে গেছে।

এ ছাড়া পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাকশী ও লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর তীরবর্তী ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। গত বুধবার থেকেই নদী তীরবর্তী এলাকাতে বাঁধ উপচে পানি ঢুকে পড়েছে।

গতকাল শুক্রবার নতুন করে সাঁড়া ইউনিয়নের আড়মবাড়িয়া পালপাড়ায় নিমাই রায়, হরিপদের ও গোপালপুরের নিজাম, হুজুর আলীর বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।

অপরদিকে উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চরকামালপুর, বিলকাদা, চরকুড়ুলিয়া এলাকায় ফসলি জমিতে পানি প্লাবিত হওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন জানান, পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় ৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পয়েন্টে পানির উচ্চতা এখন ১৪ দশমিক ১৭ মিটার। পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল লতিফ বলেন, গত তিনদিনে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার লক্ষীকুন্ডা, সাঁড়া, পাকশী ও সাহাপুর ইউনিয়নের কিছু এলাকায় ফসলি জমিতে পানি প্রবেশ করায় ২৫৫ হেক্টর জমির মূলা, মিষ্টি কুমড়া, করলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি, ৩৫ হেক্টর মাসকালাই, ৩৪ হেক্টর আখ ও ২০০ হেক্টর জমির কলার ক্ষতি হয়েছে।

কেএইচ/সিবি/এডিবি/