ন্যাভিগেশন মেনু

ওমিক্রন দ্রুত ছড়াচ্ছে, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন: প্রধানমন্ত্রীর


করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন দ্রুত ছড়াচ্ছে জানিয়ে দেশের জনগণকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নবনির্মিত ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যুক্ত এ কথা হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা জিনিস সবাই একটু লক্ষ্য রাখবেন, নতুন আরেকটা ভ্যারিয়েন্ট দেখা দিয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়াচ্ছে, একসঙ্গে পুরো পরিবার আক্রান্ত হচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তাই সবাইকে বলব যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলা এবং আমরা ইতিমধ্যে কিছু নির্দেশনা দিয়েছি সেই নির্দেশনাগুলো সবাই মেনে চলবেন।

করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, যারা এখনও টিকা নেননি, দ্রুত তারা টিকা নিয়ে নেবেন। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরও টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। টিকা নিলে অন্ততপক্ষে জীবন রক্ষা পাবে।

গবেষণা লব্ধ জ্ঞানকে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৌলিক গবেষণার পাশাপাশি প্রায়োগিক গবেষণাতেও জোর দিয়ে দেশের অব্যবহৃত সম্পদকে গবেষণার মাধ্যমে মানুষের কাজে লাগানোর আহবান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গবেষণার সাথে সাথে এই গবেষণা লব্ধ জ্ঞান আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তার ওপর আমরা জোর দিচ্ছি। মৌলিক গবেষণার পাশাপাশি প্রয়োগিক গবেষণার ওপরও জোর দিতে হবে। এ বিষয়ে যারা গবেষক তারা নিশ্চয়ই এ বিষয়ে কাজ করবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশিয় সম্পদ যা আছে, অনেক অমূল্য সম্পদ রয়ে গেছে যা আমরা এখনও ব্যবহার করতে পারিনি বা ধরা ছোঁয়ার বাইরে, সেগুলোও আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। এর ওপর গবেষণা করে সেগুলোও যাতে দেশের মানুষের কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে’।

সরকার প্রধান বলেন, আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বা খাদ্য উৎপাদন বা ইঞ্জিনিয়ারিং বা অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রেই গবেষণা প্রয়োজন। আসলে গবেষণা ছাড়া উৎকর্ষ সাধন হয়না। আর টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জন করতে গেলে আমাদের গবেষণা একান্তভাবে দরকার। সে জন্য সবাইকে গবেষণার দিকে একটু নজর দেয়া দরকার। আর সারাবিশ্বে প্রযুক্তি ব্যবহারের যে প্রভাব বেড়েছে সেই প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আমাদেরকেও গবেষণায় সবসময় নজর দিতে হবে।

বিজ্ঞান ও উন্নত প্রযুক্তির এ যুগে যে সব দেশ বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এগিয়ে যাচ্ছে, তারাই অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত উন্নতি করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্বাস্থ্য খাতের গবেষণায় পিছিয়ে থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, অন্যান্য গবেষণায় এগিয়ে গেলেও আমাদের দেশ স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায় পিছিয়ে রয়েছে এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা কম হচ্ছে। এ জন্য চিকিৎসকদের অনেককেই রোগীর সেবার পর আর গবেষণায় যুক্ত হতে না পারার প্রসঙ্গ ও তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর সরকার স্বাস্থ্য বিষয়ে গবেষণা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী গবেষণার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমাদের সমুদ্র সম্পদ অনুসন্ধান এবং আহরণ বিষয়ে গবেষণা, সুনীল অর্থনীতিকে জাতীয় উন্নয়নে ব্যবহার করার বিষয়ে গবেষণা এবং রপ্তানি পণ্যের গুনগত মান বজায় রেখে পণ্য রপ্তানির সনদ প্রদানের ক্ষেত্রেও গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এ সময় বিএনপি সরকারের সময় চিংড়ি মাছে লোহা ভরে রপ্তানি করায় ইউরোপে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই রপ্তানি বাজার পুণরায় চালুর কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণার উন্নয়নে এবং দেশে যথাযথ জ্ঞানসম্পন্ন বিজ্ঞানী-গবেষক সৃষ্টিতে ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স’ বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মুহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী স্বাগত বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে নবনির্মিত ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স’এর ওপর একটি ভিডিও চিত্র ও প্রদর্শিত হয়।