ন্যাভিগেশন মেনু

কবে আসবে করোনার ভ্যাকসিন, জানালেন বিল গেটস


চীন থেকে বিশ্বের ২০৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। দিন দিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। বিজ্ঞানীরা করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নিরলসভাবে। কয়েক ধরনের ভ্যাকসিন তৈরি করে মানব শরীরে প্রয়োগও করেছেন। তবে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি এখনও।

এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কোনো ঘোষণা অদ্যাবধি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।

তবে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে করোনার ১০৯ টি ভ্যাকসিন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। কবে আসছে করোনার টিকা সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন বিশ্ববাসী।

কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক কবে আসছে সে বিষয়ে এবার তথ্য দিয়েছেন মাইক্রোসফ্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। এক ব্লগ পোস্টে তিনি লিখেছেন, টিকা তৈরিতে ৯ মাস লাগবে।

বিল গেটস তার ওয়েবসাইট গেটসনোটসে লিখেছেন, করোনাভাইরাসের টিকা ১৮ মাসের মধ্যে পাওয়া যাবে। তবে বিল গেটস আরেকটু বেশি আশাবাদী হয়ে বলেছেন, ৯ মাসের মধ্যেও টিকা হাতে চলে আসতে পারে। আবার তিনি একই সময়ে বলেছেন, টিকা উদ্ভাবন করতে দুই বছরও লেগে যেতে পারে।

টিকা তৈরির প্রচলিত পদ্ধতির বিষয়ে বিল গেটসের ব্যাখ্যা, ১৮ মাস যদিও দীর্ঘ সময় মনে হয় তবুও বিজ্ঞানীদের ক্ষেত্রে এটাই হবে দ্রুততম টিকা উদ্ভাবনের ঘটনা। টিকা তৈরিতে সাধারণত পাঁচ বছর সময় লাগে। একবার আপনি লক্ষ্য নির্ধারণ করার জন্য কোনো রোগ বাছাই করার পরে, আপনাকে ভ্যাকসিন তৈরি করতে হবে এবং এটি প্রাণীতে পরীক্ষা করতে হবে। তারপরে মানুষের ওপর নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতার জন্য পরীক্ষা শুরু করা হয়।

করোনা টিকা উদ্ভাবনে যে খরচ দরকার তাতে কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়া দ্রুত হয়েছে।

প্রথমত, আর্থিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই কারণ সরকার এবং সংস্থাগুলি ভ্যাকসিনটি খুঁজে পেতে যা কিছু করার প্রয়োজন তা করার জন্য তাদের সমর্থন বাড়িয়েছে।

গেটস বলেন, গত ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ১১৫ ধরনের ভ্যাকসিন উন্নয়নের তথ্য তিনি পেয়েছেন। এর মধ্যে বিশেষ ৮ থেকে ১০টি সম্ভাবনাময় বলে তিনি মনে করেন। এ ছাড়া শুরুতে যেসব টিকা আসবে তা শতভাগ নিখুঁত হবে না বলেও মনে করেন তিনি। তবে এগুলো কাজ করবে।

নিজের ব্লগ পোস্টে বিল গেটস উল্লেখ করছেন, শতভাগ নিখুঁত না হলেও টিকা উৎপাদন থামানো যাবে না। এ ছাড়া এটি সবার জন্য সমানভাবে বন্টনের বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। বাস্তবতা হলো প্রত্যেকে একই সময়ে ভ্যাকসিনটি পেতে সক্ষম হবে না। ৭০০ কোটি ডোজ তৈরি করতে কয়েক মাস - এমনকি কয়েক বছর সময় লাগবে। প্রথম ব্যাচটি প্রস্তুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বিতরণ শুরু করা উচিত।

এদিকে রেমডেসিভির করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসার জন্য কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। এমনটি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অ্যালার্জি এবং সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অ্যান্থনি স্টিফেন ফাউসি।

স্থানীয় সময় বুধবার হোয়াইট হাউসে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ-এর তত্ত্বাবধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১০৬৩ মানুষের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন যুক্তরাষ্ট্রের এই শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক।

তিনি জানান, তাদের বেশির ভাগের মধ্যে রেমডেসিভির দেয়া হয়েছিল। অন্যদের প্লেসেবো (ভুয়া ওষুধ) দেয়া হয়। তাতে দেখা গেছে

রেমডেসিভির গ্রহণকারীরা গড়ে ১১ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অন্যদিকে প্লেসেবো গ্রহণকারীদের সুস্থ হতে সময় লেগেছে গড়ে ১৫ দিন।

তবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্তদের শরীরে রেমডেসিভির দেয়ার পরে দেখা গেছে অন্যদের তুলনায় কম সময়ের মধ্যে তারা সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে এই ওষুধ মৃত্যুহার কমাতে পারবে কিনা, তা এখনও প্রমাণিত হয়নি।

ডা. ফাউসি বলেন, সব তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে দেখা যায় যে, রেমিডেসিভির প্রয়োগের ফলে করোনা আক্রান্ত রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, যে সব করোনা আক্রান্ত রোগী রেমডেসিভির গ্রহণ করেছে তাদের মৃত্যুহার ৮ শতাংশ ছিল কিন্তু যারা প্লেসেবো নিয়েছে সেখানে তাদের মৃত্যুহার ছিল ১১.৬ শতাংশ। তবে এটি দ্বারা প্রমাণিত নয় যে রেমডেসিভির মৃত্যুহার কমায়।

ফাউসি বলেন, এখন থেকে প্রমাণিত হলো যে আমরা করোনা চিকিৎসা দেওয়ার জন্য যে কোনও একটি ওষুধ ব্যবহার করতে পারবো।

ওআ