ন্যাভিগেশন মেনু

করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করতে নিধন হবে ৫ লাখ হাঙর


করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের প্রতীক্ষায় এখন গোটা বিশ্ব। ইতোমধ্যে অনেগুলো প্রতিষ্ঠান শীঘ্রই ভ্যাকসিন বাজারে আনার কথা জানিয়েছে। যা বিশ্ববাসীকে আশার আলো দেখাচ্ছে। 

তবে এই উদ্বেগের মাঝে আরেকটি চিন্তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করতে অন্তত পাঁচ লাখ হাঙর মেরে ফেলা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার শার্ক অ্যালায়েজ নামে এক হাঙর সংরক্ষণ গ্রুপ এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা গেছে, এই বিপন্ন প্রাণির শরীরে এক ধরনের প্রাকৃতিক তেল নির্গত হয় যা ভ্যাকসিন তৈরিতে অত্যন্ত অপরিহার্য। হাঙরের দেহ থেকে নির্গত তেলই এখন দরকার বিজ্ঞানী-চিকিত্‍সকদের।

অ্যাজুভ্যান্ট একপ্রকার স্ক্যালেন, যা হাঙরের লিভারের মধ্যে থাকে। সেই প্রাকৃতিক তেল পেতেই বর্তমানে হাঙর হত্যালীলার জন্য তৈরি হচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। 

এক টন স্ক্যালেন তৈরি করতে ৩ হাজার হাঙরকে মেরে ফেলতে হবে। বিশ্বের সবাইকে একবার করে করোনা ভ্যাকসিন দিতে গেলে প্রায় আড়াই লক্ষ হাঙরকে মারতে হবে। আর যদি দুবার করে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হয়, তাহলে সেই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াবে পাঁচ লাখে। 

প্রসঙ্গত, সব টিকা তৈরিতেই লাগে অ্যাজুভ্যান্ট। ল্যাটিনে যাঁকে বলে হেল্প (help)। বাংলায় সাহায্য। সেই অ্যাজুভ্যান্ট (adjuvant) হলো একটি ফার্মাকোলজিক্যাল অ্যাজেন্ট। যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের রোধ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেকাংশই বাড়িয়ে দেয়। আর সেই উপাদান পাওয়া যায় হাঙরের লিভারে। টিকার কার্যকরী ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে এর অপরিহার্য ভূমিকা রয়েছে। ফলে এ থেকে পরিষ্কার যে, মানবজাতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে লাখ লাখ হাঙরের প্রাণ যাবে অচিরেই।

হাঙর ছাড়াও অন্যান্য সামদ্রিক প্রাণির দেহে স্ক্যালেন পাওয়া যায়। কিন্তু হাঙরের লিভারে যে স্ক্যালেন পাওয়া যায় তা অন্যদের তুলনায় অনেক শক্তিশালী ও কার্যকরী।

সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় জানা গেছে, মেকানিক তেল, কসমেটিক্স ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্য তৈরির জন্য বছরে ৩০ লাখ হাঙর নিধন করা হয়। শুধু করোনা ভ্যাকসিনের জন্যই নয়, হাঙরের লিভার অয়েলের দাবি মেটাতে বহু বিপন্ন প্রজাতির হাঙরকে মেরে ফেলার কাজ হয়ে চলে বছরের পর বছর ধরে। 

ব্রিটিশ ফার্মা জায়েন্ট গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন করোনা ভ্যাকসিনের প্রায় ১০০কোটি ডোজ তৈরির করার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে ঘোষণা করেছে। আর এই টিকা তৈরির কাজে ইতোমধ্যেই হাঙরে স্ক্যালেন ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছে ওই বিশ্ববিখ্যাত সংস্থাটি।

ভ্যাকসিনের ডোজ যতো বাড়বে ততো বেশি হাঙর নিধন হবে। তবে কীভাবে হাঙর ছাড়াও স্কোয়ালিন পাওয়া যায় সে ব্যাপারে গবেষণা শুরু হয়েছে।

সিনথেটিক স্কোয়ালিন ব্যবহার করলে ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্য়াকসিন তৈরিতে কোনও প্রভাব পড়বে কিনা তাও দেখছেন গবেষকরা। তবে করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে সেটা কতোটা কার্যকরী হবে তা এখনও অন্ধকারে বিশেষজ্ঞরা।


এডিবি/