ন্যাভিগেশন মেনু

করোনাক্রান্ত যুবক অবস্থান নিলেন গাছের ডালে


ছোটবেলায় অরণ্যদেবের কমিকস অনেকেরই মনে আছে? তেমন্‌ কাণ্ড ঘটালেন এক যুবক।যুবকের ভাষায় এটা তার  গাছবাড়ি!

যুবকটি বালিশ, তোষক নিয়ে গাছের উপরে এক নিরাপদ আস্তানা বানিয়ে সেখানেই বসে রয়েছেন। কিন্তু ব্যাপারটা মোটেই কিন্তু তাঁর কোনও শখের অ্যাডভেঞ্চার নয়।

 আসলে ওই গাছবাড়ি কার্যত এক কোভিড আইসোলেশন ওয়ার্ড! করোনা আক্রান্ত হওয়ায় আপাতত সেখানেই তাকে কাটাতে হচ্ছে দিনরাত। তেলেঙ্গানার  ওই তরুণের নাম শিবা।

রাজ্যের  নালাগোন্ডা গ্রামের বাসিন্দা শিবা ও তার পরিবার। সে অবশ্য গ্রামে থাকে না। কলেজের পড়াশোনা চালায় শহরে বসে। কিন্তু অতিমারীর ধাক্কায় কলেজ বন্ধ হওয়ায় গ্রামেই ফিরতে হয়েছে। এদিকে বাড়িতে আসার পরে গত ৪ মে তার শরীরে ধরা পড়ে সংক্রমণ।

এমতাবস্থায় তাকে আলাদা থাকারই পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু বাড়িতে সেটা সম্ভব নয়। ছোট্ট বাড়িতে অতজন সদস্যের কারণে আলাদা নিভৃত কক্ষের ব্যবস্থা করতে পারেনি শিবা। কাছেপিঠে কোনও হাসপাতাল কিংবা আইসোলেশন সেন্টার নেই।

ছোট্ট গ্রামে চিকিৎসা করাতে লোকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই ছোটে। সেটাও ৫ কিমি দূরে। হাসপাতাল তো ৩০ কিমি দূরত্বে। সুতরাং কোথাও থাকার জায়গা নেই তার। অগত্যা এই গাছবাড়ির অভিনব পরিকল্পনা মাথায় খেলে যায়।

গাছের উপরে বাঁশের কাঠামো বানিয়ে সেখানে তোষক, বালিশ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ১১ দিন সেখানেই কাটিয়েছে সে। এক অদ্ভুত নিভৃতবাস। প্রায় ৩৫০ পরিবারের বাস গ্রামে। কিন্তু কেউই এগিয়ে আসেনি শিবাকে সাহায্য করতে।

সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে শিবা জানাচ্ছে, ‘‘গ্রামে সকলেই খুব ভয়ে রয়েছে। কেউই বাড়ি থেকে বেরচ্ছে না। আমি জানি না আমার করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরটা আদৌ কোনও কোভিড স্বেচ্ছাকর্মী সরপঞ্চকে (মুখিয়া) দিয়েছেন কিনা।

তার জন্য বাড়ির অন্য সদস্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে যাক চায়নি শিবা। তাই বেছে নিয়ে গাছবাড়ির এই বাস। যা বুঝিয়ে দেয়, ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে করোনা আক্রান্তদের আলাদা রাখার চ্যালেঞ্জটা কতটা কঠিন।

এস এস