ন্যাভিগেশন মেনু

করোনা আঘাত হানে মতিষ্কেও, জটিলতা ঘটে স্নায়ুতন্ত্রের


আমরা এতদিন জানতাম , করোনার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে মানুষের শ্বাসযন্ত্রে। কারণ এই ভাইরাস মূলত ফুসফুসেই আঘাত হানে।

সেকারণেই সম্ভবত, সর্দি-জ্বর-শ্বাসকষ্ট বা আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে নিউমোনিয়ার উপসর্গকেই কোভিডের প্রাথমিক লক্ষণ বলে ধরে নেওয়া হত।

কিন্তু এবার সামনে এল আরও হাড় হিম করা তথ্য। এক সমীক্ষার ভিত্তিতে ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের   গবেষকদের দাবি, কোভিডে প্রভাব পড়তে পারে মস্তিষ্কেও।

এই ভাইরাসের সংক্রমণে স্নায়ুতন্ত্রের একাধিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন স্নায়ুতন্ত্র অসাড় হয়ে যেতে পারে। হতে পারে ডিলিরিয়াম, স্ট্রোক। এমনকী নার্ভ ড্যামেজও হয়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয়। ‘এডিইএম’ নামে একটি বিপজ্জনক প্রদাহজনিত পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে।

গবেষকদের দাবি, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কিছু কিছু কোভিড রোগীর শ্বাসযন্ত্রের গুরুতর সমস্যা ধরাই পড়েনি। উলটে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার। প্রসঙ্গত, গবেষকদলের নেতৃত্বে ছিলেন ড. মাইকেল জ্যান্ডি।

গবেষণার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে ‘ব্রেন’ জার্নালে।ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (University College London) গবেষকরা মোট ৪৩ জন করোনা রোগীর উপর সমীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।

গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এই ৪৩ জনের মধ্যে কারও কারও ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের সাময়িকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দিতে দেখা গিয়েছে। কারও স্ট্রোক হয়েছে, কারও বা স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গবেষকদের মতে, মহামারীর প্রভাবে অনেক সময়ই মানুষের স্নায়ুতন্ত্র, মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইতিহাসেও এই উদাহরণ রয়েছে। জ্যান্ডির দাবি, ১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ফ্লু’র দাপট ছিল। তার পর ১৯২০-৩০ সালে

‘এনসেফেলাইটিস লেথারজিকা’ মহামারীর আকার নেয়। সেই সময় এই সব রোগে আক্রান্ত যারা হয়েছিল, তাদের ক্ষেত্রেও অনেকেরই মস্তিষ্কের বিকার ঘটতে দেখা গিয়েছিল।

আবার করোনার ক্ষেত্রেও সে রকমই হচ্ছে। ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে ভরতি হওয়া রোগী দ্রুত ‘অ্যাকিউট ডিসেমিনেটেড এনসেফালোমেলিটিস’-এর শিকার হচ্ছেন। প্রতি সপ্তাহেই এই রোগে দু’‌তিনজন আক্রান্তের খোঁজ মিলছে।

অন্যদিকে, কানাডার ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির স্নায়ুবিজ্ঞানী আদ্রিয়ান আওয়েন জানিয়েছেন, “গোটা দুনিয়ায় এখন লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এক বছর পর যদি দেখা যায় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা এক কোটি মানুষের মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাহলে বহু মানুষ কাজ করার ক্ষমতা হারাবে। সমাজের জীবনযাপনই বদলে যাবে।” যা কোনওভাবেই অভিপ্রেত নয়।

এস এস