ন্যাভিগেশন মেনু

করোনা জয়ের মন্ত্র জানালেন সাংবাদিক


শেষ পর্যন্ত করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে পেরেছেন বেসরকারি চ্যানেল দীপ্ত টেলিভিশনের এক সাংবাদিক। করোনা পজিটিভের ১৪ দিন পর এবার তার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

শনিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এক ফেসবুক পোস্টে নিজেই সে তথ্য জানিয়েছেন আহাদ হোসাইন টুটুল নামে ওই সাংবাদিক। আজকের বাংলাদেশ পোস্টের পাঠকদের  জন্য তার সেই পোস্টটি তুলে ধরা হলো-

পোস্টে আহাদ হোসাইন টুটুল লিখেছেন, ‌‘জ্বি, আমি করোনা পজিটিভ থেকে এখন নেগেটিভ।

১৪ দিন শেষে আজ থেকে মহান আল্লাহতায়ালা আমাকে মুক্তি দিয়েছেন। ১১ এপ্রিল প্রচণ্ড জ্বর আর মাথাব্যথা নিয়ে যখন সন্দেহবশত টেস্ট করাতে যাই, তখন ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি এত এত সতর্ক থাকার পরেও আমার কোভিড-১৯ পজিটিভ আসবে। কিন্তু এসেছে...

১১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে যখন ফোনে এসএমএস আসলো, এক মূহুর্তের জন্য আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। দ্রুত মেয়ে আর তার মাকে দূরে সরে যেতে বললাম। বন্দী হলাম একা একটা রুমে। মাগরিবের নামাজ পড়ে, অফিসে জানালাম। সবাই সাহস দিলো। একটাই কথা, মনোবল হারানো যাবে না।

মুহূর্তেই খবরটা ছড়িয়ে গেল। পরিচিত অপরিচিত অনেক ফোন আসতে শুরু করলো। স্তব্ধতায় এতটাই ডুবে গিয়েছিলাম যে, কারও ফোন রিসিভ করতে পারছিলাম না। তথ্য জানাতে শুধু আমার প্রতিষ্ঠানের এমডি, সিইও, নিউজ হেড আর অ্যাসাইনমেন্ট এডিটরের সঙ্গে কিছু কথা শেয়ার করলাম। কারণ সিদ্ধান্ত, অফিসে কারা আমার সঙ্গে মিশেছে, তাদের আলাদা করতে হবে।

এরপরই শুরু হলো, আমার এক কক্ষে ১৪ দিনের জীবন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আর দোয়ার পাশাপাশি, নিয়ম মেনে ১৫ দিনের ওষুধ চলতে থাকলো। অনেক শুভাকাঙ্ক্ষীর পরামর্শ অনুযায়ী গরম পানি খাওয়া, গরম পানিতে লবণ-লেবু দিয়ে গারগল করা, গরম পানির স্টিম নাক দিয়ে নিয়ে মুখ দিয়ে ছাড়া আর আদা-লেবু-গোলমরিচ-লবঙ্গ দিয়ে গরম পানি চায়ের মতো করে খাওয়া চলতে থাকলো।

বিভীষিকার দিন ছিল, পরদিনই যখন থানা থেকে আমার এলাকা লকডাউন করতে এলো। সবাই আমার বাসার দিকে, কেমন একটা চোখ নিয়ে তাকাতে থাকলো। যেন কোনো মারাত্মক অপরাধ করে ফেলেছি। কৃতজ্ঞতা এসআই মেহেদীর প্রতি, তিনি হ্যান্ডমাইকে এলাকায় ঘোষণা দিলেন- কোনো ধরনের হ্যারাসমেন্ট করা হলে ব্যবস্থা নিবেন।

১৪ দিনের এই সময়ে অনেকেই ফোন দিয়ে সাহস দিয়েছেন। পরিবার, সহকর্মী, বাড়ির মালিক, প্রিয় সংগঠনের বড় ভাইয়েরাসহ অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী খোঁজ নিয়েছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আবার অনেকেই অনেক কাছে থেকেও, খোঁজ নেননি, ভালোবাসা তাদের প্রতিও। অন্তত আগামী দিনগুলোর জন্য দোয়া করবেন।

আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর অশেষ রহমত এবং আপনাদের সবার দোয়ায় ১৪ দিন শেষে আমার কোভিড-১৯ রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

ইনশাআল্লাহ, দ্বিতীয়বার টেস্ট শেষে অচিরেই কাজে যোগ দিতে পারবো।’

উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল বেসরকারি চ্যানেল দীপ্ত টেলিভিশনের ওই সাংবাদিকের নমুনা পরীক্ষায় কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে নিজের বাসাতেই আইসোলেশনে ছিলেন তিনি।

ওআ