ন্যাভিগেশন মেনু

করোনা থেকে বাঁচাতে পারে চ্যবনপ্রাশ!


ছিল অনন্ত যৌবন ধরে রাখার ওষুধ। হলো অনন্ত মরণ রোখার হাতিয়ার! ভরসা এতোটাই যে, এ দেশে করোনাভাইরাসের থাবা পড়তেই নিয়মিত সেই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণ সেবনের নিদান দিয়েছিল আয়ুশ মন্ত্রক। আর করোনা প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার্য ওষুধের ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’-এ আর সব নামী-দামী ওষুধের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জায়গা করে নিয়েছে শতাব্দী প্রাচীন সেই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণ। 

এতদিন সাধারণ জ্বর সর্দি কাশি ও মরশুমি রোগ ঠেকাতে ইমিউনিটি বুস্টার হিসাবে যুগ যুগ ধরে ভরসার পাত্র ছিল যে চ্যবনপ্রাশ, সেই আয়ুর্বেদিক ফর্মূলাতেই কী লুকিয়ে রয়েছে করোনা রোখার কার্যকরি হদিশ?

এপ্রিলের গোড়ার দিকে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) খোঁজ শুরু করেছিল করোনা ঠেকানোর নয়া দাওয়াইয়ের। জারি হয় ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের’ রেজিস্ট্রেশনের জন্য বিজ্ঞপ্তি। সেখানে একাধিক স্টাডি রিপোর্ট জমা পড়ে। ছাড়পত্র পাওয়ার পর আপাতত ৬৩টি আবেদন বা স্টাডি রিপোর্ট ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে রয়েছে। 

জানা গেছে, সেখানে অ্যান্টিভাইরাল রেমডিসিভির ও অ্যান্টি এইচআইভি লোপিনাভির, রিটোনাভিরের মতো ওষুধের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে চ্যবনপ্রাশও। চিনি, মধু, আমলকী ও একাধিক সুপ্রাচীন দুষ্প্রাপ্য ভারতীয় ভেষজ দিয়ে চ্যবন মুনির তৈরি যৌবন ধরে রাখার সেই ফর্মুলা এখন শরীরে করোনা রোধে কতটা কার্যকরি, তা নিয়েই এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চ্যবনপ্রাশের ব্যবহার নিয়ে কোনও সংশয় নেই। তবে এখন সেই ইমিউনিটির হাত ধরে এগিয়ে এ দিয়ে করোনার আক্রমণ রুখে দেওয়া যায় কি না, তা-ই খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। 

এ নিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাচ্ছে রাজস্থানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ আয়ুর্বেদ, জয়পুর। ভারতের একটি বৃহৎ চবনপ্রাশ নির্মাতা কোম্পানির সহায়তায় শুরু হয়েছে ট্রায়াল। সেখানে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন ৬০০ জনকে দু’টি দলে ভাগ করা হয়েছে। একটি দলকে ৪৫ দিন ধরে নিয়মিত চ্যবনপ্রাশ খাইয়ে শরীরে রোগ প্রতিরোধের উন্নতির মাপজোক করা হচ্ছে। অন্য দলটিকে সাধারণ ডায়েটে রেখে শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা যাচাই করা হচ্ছে। 

ট্রায়ালের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ডা. পবনকুমার গুপ্তার দাবি, “চ্যবনপ্রাশের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে শরীরে করোনার প্রবেশ রুখে দেওয়ায় এই স্টাডির মূল লক্ষ্য।” 

সেন্ট্রাল আয়ুর্বেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর ড্রাগ ডেভলপমেন্ট-এর বঙ্গীয় শাখার চিকিৎসক ডা. অচিন্ত্য মিত্রর কথায়, “চ্যবনপ্রাশ বহু পুরনো ওষুধ। মানুষের মধ্যে এর গ্রহণযোগ্যতা এতটাই যে এটি কিনতে প্রেসক্রিপশনেরও প্রয়োজন হয় না। ৫০টিরও বেশি ভেষজ ঔষধি দিয়ে চ্যবনপ্রাশ তৈরি হয়। যার মধ্যে বেশ কিছু ঔষধি এখন বিরল ও দুষ্প্রাপ্য। তাই এখন বিকল্প দিয়ে কাজ চালাতে হয়। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকানোর জন্য চ্যবনপ্রাশ একটি কার্যকরী ও সহজলভ্য ওষুধ।”

সুত্র: সংবাদপ্রতিদিন

এডিবি/