ন্যাভিগেশন মেনু

কলাপাড়ায় জেলের মৃত্যুর ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার


পটুয়াখালীর কলাপাড়ার রাবনাবাদ নদীতে নৌপুলিশের ধাওয়ায় মাছ ধরা ট্রলারের জেলে সুজন হাওলাদারের (৩৫) মৃত্যুর ঘটনায় নৌপুলিশের চার সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় নৌপুলিশ ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) ঘটনায় অভিযুক্ত পায়রা বন্দর নৌপুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মামুনসহ চার পুলিশ সদস্যকে কলাপাড়া থেকে প্রত্যাহার করে বরিশাল আঞ্চলিক অফিসে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ।

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কলাপাড়ার রাবনাবাদ নদীতে মাছ ধরার সময় পায়রা বন্দর নৌপুলিশের এএসআই মামুনের নেতৃত্বে একটি টহল টিম জেলে সুজনের ট্রলারকে ধাওয়া করে। প্রায় দুই ঘন্টা ধাওয়ার পর ট্রলারের পাঁচ জেলের মধ্যে চার জেলে তীরে উঠে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু ট্রলারে আটকা পড়ে জেলে সুজন হাওলাদার। পরবর্তীতে ওই ট্রলারে জেলে সুজনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। 

জেলেদের দাবি, তাকে মারধোর করায় সে মারা যেতে পারে। তবে নৌপুলিশ তাকে মারধর করার বিষয়টি অস্বীকার করে।

এই ঘটনায় নিহতের শ্বশুর রুহুল আমিন কলাপাড়া থানায় মঙ্গলবার একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

নৌপুলিশের বরিশাল আঞ্চলিক অফিসের এসপি মো. কফিল উদ্দিন জানান, নৌপুলিশ পটুয়াখালী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবিবকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। 

পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ জানান, জেলে সুজনের মৃত্যুর ঘটনায় কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমেদ আলীকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলে সুজনের মৃত্যুর ঘটনাটি মুহুর্তের মধ্যে এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতশত নারী-পুরুষ রাবনাবাদ নদীর ঢোশ পয়েন্টে জড়ো হয় এবং নৌপুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় তাদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে। পরবর্তীকে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক, কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমেদ আলীসহ কলাপাড়া ও মহিপুর থানার অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ মানুষদের শান্ত করেন এবং পাঁচ ঘন্টা পর অবরুদ্ধ নৌপুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিহত সুজনের শ্বশুর রুহুল আমিন অপমৃত্যু মামলায় উল্লেখ করেন, রাবনাবাদ নদীতে মাছ শিকার করা অবস্থায় উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে সুজন কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে দ্রুত কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

এমকেআর/এডিবি/