ন্যাভিগেশন মেনু

সিরাম থেকে কেনা ভ্যাকসিন সরকার বিনামূল্যে দেবে


করোনাভাইরাসের ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে কিনে বাংলাদেশের মানুষকে বিনামূল্যে দেয়া হবে। প্রত্যেকের জন্য দুই ডোজ ভ্যাকসিন দরকার। সে হিসাবে দেশের দেড় কোটি মানুষ বিনামূলে এই টিকা পাবেন।

ঢাকায় মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে কোভিড-১৯ সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবেলা ও ভ্যাকসিন সংগ্রহের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়।

ঢাকার গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।  ওই বৈঠকে ঘরেরবাইরে বের হলে  মাস্ক না পরার অপরাধে সর্বোচ্চ জরিমানায় কাজ না হলে পাশাপাশি জেলও দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে করে হোক দেশের সকল মানুষের জন্য করোনা প্রতিরোধ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে হবে। এখন আমাদের সব চেয়ে বড় কাজ দ্রুত ভ্যাকসিন এনে তা সর্বত্র সরবরাহ করা। দ্রুত এই পদক্ষেপ নিতে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর আগামীকাল বুধবার ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপিত হতে পারে। ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন পেলে দ্রুত করোনা প্রতিরোধ ভ্যাকসিন আমদানি করা হবে।  

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অক্সফোর্ডের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশকে অক্সফোর্ডের ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে সিরাম ইনস্টিটিউট।

 তিনি বলেন, গত ১৪ অক্টোবর কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য অক্সফোর্ডের তৈরি ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত ভ্যাকসিন বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৩ কোটি ডোজ বিক্রির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। গত ৫ নবেম্বর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে সিরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সই হয়।

 ১৬ নবেম্বর অর্থ বিভাগ ভ্যাকসিন কেনার জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে ৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ভ্যাকসিন কেনার জন্য ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাব পাঠাবে। এ প্রস্তাব চলে এসেছে। ভ্যাকসিন পাওয়া বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটা গাইডলাইন আছে।

যারা ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় রয়েছেন- পুলিশ, প্রশাসনের লোক যারা মাঠে চাকরি করছেন, তারপর বয়স্ক লোক, শিশু- এদের আগে দেওয়া হবে ভ্যাকসিন।  তিনি আরও বলেন, মানুষকে এ ভ্যাকসিন বিনা পয়সায় দেয়া হবে। টাকা সরকার পরিশোধ করে দিচ্ছে।  আমাদের এক নম্বর শর্ত হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল মানতে হবে।

চিনের প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাকের টিকার ট্রায়াল হওয়ার কথা ছিল, সেটি কোন পর্যায়ে আছে- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা বাতিল করিনি। ওরা একটা টাকা চাচ্ছে। সরকার এখনও দেয়নি বা রাজি হয়নি। আমরা সেটা এখনও বাতিলও করিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, চলতি সপ্তাহ থেকে যারা মাস্ক পরছে না তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর সিদ্ধান্তে যাব। আমার মনে হয়, ঢাকার বাইরে অবস্থা ভাল। ডিসিরা বলছেন, জেলা সদরে মানুষ মোটামুটি সচেতন। ঢাকা শহরে বোধহয় এখনও পুরোপুরি সচেতন হয়নি।

মাস্ক না পরলে জরিমানা দিতে হবে ৫০০ টাকা। এখন থেকে সর্বোচ্চ জরিমানা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে কাজ না হলে প্রয়োজনে শাস্তি হিসেবে জেলও দেয়া হতে পারে।

এস এস