ন্যাভিগেশন মেনু

চাটমোহরে গবাদিপশুর খাদ্যসংকট


পাবনার চাটমোহরে গবাদিপশুর খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু ছোট বড় বিলে বর্ষার পানি প্রবেশ করার ফলে গোচারণ ভূমি ডুবে যাওয়ায় গবাদিপশুর খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। খড় ও অন্যান্য খাবারের মূল্য বৃদ্ধির ফলে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া নিয়ে বিপাকে পরেছেন খামারি ও পশু মালিকরা।

বিশেষত, গরু-মহিষের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে বিকল্প হিসেবে অনেকে পানিতে ভাসমান কচুরিপানার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। খরচ সাশ্রয়ের জন্য অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি গরু-মহিষকে এখন কচুরিপানা খাওয়াচ্ছেন এ এলাকার মানুষ।

জানা গেছে, আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে চাটমোহরের নিমাইচড়া, হান্ডিয়াল ও ছাইকোলা ইউনিয়নের বিলগুলোতে বর্ষার পানি প্রবেশ করে। বছরের অন্য সময় দিনে গরু-মহিষকে মাঠে নিয়ে পতিত গোচারণ ভূমিতে খাওয়ানো সম্ভব হলেও বর্ষা ও শরতের প্রায় চার মাস মাঠে পানি থাকায় এগুলোকে মাঠে নিয়ে খাওয়ানো সম্ভব হয় না। এ সময় পুরোপুরি খড়, খইল, ভুষিসহ অন্যান্য দানাদার খাবারের উপর নির্ভর করতে হয়। 

বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে কৃষক বোরো ধানের কিছু খড় পেলেও তা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়। ভাটি এলাকায় খড়ের দাম আরও বেশি হওয়ায় সেসব এলাকার খড় ব্যবসায়ীরা চলনবিল এলাকায় এসে চড়া দামে বোরো ধানের খড় কিনে নিয়ে যান।

কুষ্টিয়া, যশোর, ঝিনাইদহসহ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে খড় ব্যবসায়ীরা কিছু খড় কিনে অতিরিক্ত ট্রাক ভাড়া দিয়ে চাটমোহর এলাকায় এনে বেশি দামে বিক্রি করছেন।

উপজেলার আড়িংগাইল গ্রামের গাভীর খামারি আলহাজ হোসেন জানান, ৯টি গাভী ও ৩টি বাছুর রয়েছে তার খামারে। এ গরুগুলোকে প্রতিদিন প্রায়  আড়াই হাজার টাকার খাবার খাওয়াতে হয়। বর্তমান এ এলাকায় প্রতি মণ খড় প্রায় ৫০০ টাকায়, ৩৭ কেজির ভুষি ১ হাজার ৪৩০ টাকায়, ৪৫ কেজি নাড়িকেলের খৈল ১ হাজার ৬৫০ টাকায়, ২৫ কেজি কেয়ার ফিড ৬১৫ টাকায় এবং প্রতি মণ চালের পালিশ ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অর্থ সাশ্রয় করতে অন্যদের মতো তিনি নিজেও বিভিন্ন নালা, খালবিল থেকে কচুরিপানা কেটে গরুকে খাওয়ান।

তিনি আরও জানান, 'কিছু পশু মালিকের মাঠাল জমা জমি না থাকায় সারাবছর গোখাদ্য কিনে খাওয়াতে হয়। সারাবছর চড়া দামে পশুখাদ্য কিনে খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।'

এ ব্যাপারে ভেটেরেনারি সার্জন ডা. মো. রোকনুজ্জামান জানান, 'কচুরিপানা গবাদিপশুর আদর্শ খাবার নয়। গবাদিপশুর খাদ্য সংকটের কারণে অনেকে কচুরিপানা খাওয়ান। কিন্তু এতে পানির পরিমান বেশি থাকে। গবাদিপশুকে মাত্রাতিরিক্ত কচুরিপানা খাওয়ালে পাতলা পায়খানা বা বদহজম হতে পারে।'

আইকেআর/এডিবি/