ন্যাভিগেশন মেনু

চীনের ছাংএ্য-৫ চন্দ্রানুসন্ধান উপগ্রহের সফল উৎক্ষেপণ


ছাংএ্য-৫ অনুসন্ধান উপগ্রহবাহী ছাংচেং রকেট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে চীন। এর মধ্য দিয়ে চীনের চন্দ্রানুসন্ধান কর্মসূচি তৃতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এবারেরটি হলো চীনের চন্দ্রানুসন্ধানের ষষ্ঠ মিশন এবং এ পর্যন্ত চীনের মহাকাশ কর্মসূচির সবচেয়ে জটিল ও কঠিন মিশন। এই মিশনের মাধ্যমে চীন চাঁদের প্রস্তর-নমুনা সংগ্রহ করে আনবে, যাতে চাঁদের উৎপত্তি ও বিবর্তন সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করা যায়।

মঙ্গলবার ভোরে সাড়ে চারটায় ছাংচেং-৫ রকেটকে ছাংএ্য-৫ নভোযানে করে হাইনান প্রদেশের ওয়েনছাং থেকে উৎক্ষেপণ করা এবং নির্দিষ্ট কক্ষপথে পাঠানো হয়।

এরপর ছাংএ্য-৫ এগারটি পর্যায়ের মধ্য দিয়ে ২০ দিন পর চাঁদ থেকে ২ কেজি প্রস্তর-নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরে আসবে।

আগের কয়েক বারের চন্দ্রানুসন্ধান মিশনের চেয়ে এবারের মিশন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এবারের উদ্দেশ্য হলো নমুনা সংগ্রহ করা। এটি চীনের চন্দ্রানুসন্ধান কর্মসূচির তৃতীয় পর্যায়।

চীনের চান্দ্রানুসন্ধানের তৃতীয় পর্যায়ের প্রধান নকশাকার ফেই চাও ইউ বলেন, “এবারের পরিকল্পনার তিনটি উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমটি হলো, নমুনা-সম্পর্কিত নতুন প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা। দ্বিতীয়ত, পৃথিবীর বাইরে থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নমুনা সংগ্রহ করা এবং তৃতীয়ত, চন্দ্রানুসন্ধান পরিকল্পনা ব্যবস্থাকে আরেক ধাপ উন্নত করা।”

আগে কোনও কোনও দেশ চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিল। কিন্তু এবার চীন মানুষের উপস্থিতি ছাড়া নমুনা সংগ্রহ করবে। এটি বিশ্বের প্রথম বার। চীন মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কর্পোরেশন (সিএএসসি)-এর অনুসন্ধানী উপগ্রহ ব্যবস্থার ডেপুটি নকশাকার শি ফেং জিং বলেন, “আগের মিশন ছিল মানববাহী যানের চাঁদে অবতরণ। নভোচারীরা বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন তখন। প্রতিবার মাত্র ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম নমুনা সংগ্রহ করতে পেরেছেন তারা। কিন্তু আমরা কেজি পরিমান নমুনা আনতে চাই। এত বেশি কোন দেশ করেনি।”

চীনের ছাংএ্য-৫ হলো এ পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে জটিল অনুসন্ধানী উপগ্রহ ব্যবস্থা। এটি অরবিটার, রিটারার, ল্যান্ডার এবং আরোহী চারটি অংশ নিয়ে গঠিত হয়। মিশনে চারটি অংশ একসাথে কাজ চালাবে। ছাংএ্য-৫ অনুসন্ধানী উপগ্রহের উপ-পরিচালনা ও সিএএসসি’র শাংহাই মহাকাশ প্রযুক্তি গবেষণালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমিশনের স্থায়ী সম্পাদক চাং ইউ হুয়া বলেন, “স্বয়ংক্রিয়ভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠের নমুনা সংগ্রহ এবার প্রথম। সেজন্য ছাংএ্য-৫ উপগ্রহ অনেক চ্যালেঞ্জ ও জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছে।”

সিএএসসি’র ছাংএ্য-৫ অনুসন্ধানী উপগ্রহ ব্যবস্থার উপ-সাধারণ নকশাকার শি ফেং জিং বলেন, “চীনা বিজ্ঞানীরা চাঁদের ইতিহাসের একটি সম্পূর্ণ ছবি তুলতে চান। সেজন্য বিভিন্ন যুগের নমুনা প্রয়োজন। বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা এই ধারণায় উপনীত হয়েছেন যে, আমাদের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহের দু’টি পদ্ধতি আছে। আমরা পৃষ্ঠতল ও ড্রিল সংগ্রহপদ্ধতিতে আরো বেশি নমুনা সংগ্রহ করবো।”