ন্যাভিগেশন মেনু

চীনের উন্মুক্তকরণের সুযোগ উপভোগ করছে বৈদেশিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো


বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের যোগদানের ২০তম বার্ষিকী চলতি বছর। গত ২০ বছরে, বিশেষ করে সিপিসি’র অষ্টাদশ পাঁচসালা পরিকল্পনার পর থেকে সংস্কার বেগবান করা এবং উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নানা সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সমন্বিত কল্যাণ অর্জন নিশ্চিত করেছে চীন। বৈদেশিক উন্মুক্তকরণে চীন বড় দেশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। চীনা বাজার উন্নয়নের ফলে ব্যাপক কল্যাণ ও সুযোগ উপভোগ করছে বৈদেশিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো।

 “দে থের্মমিক্স” কুকিং মেশিন, হাই-এন্ড ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ও সুইপিং রোবট প্রস্তুতকারক জার্মান-ভিত্তিক বহুজাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান ফোভিক গ্রুপ অধিক থেকে অধিক চীনা ভোক্তাদের কাছে পরিচিতি পেয়েছে।

এ গ্রুপের চীন-বিষয়ক মহাব্যবস্থাপক চা শেং বলেন, ভ্যাকুয়ামক্লিনার প্রথম চীনা বাজারে প্রবেশের পর থেকে এ পর্যন্ত চীনা বাজারে তা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা অবিরাম দৌড়াচ্ছি। বিদেশে অনেক বছর ধরে কাজকর্ম করছি। অনেক স্থানে আমরা প্রথম পর্যায়ে রয়েছি। তবে চীনের ভূখণ্ডে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে এবং তারা অনেক ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে রয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ ও মিথস্ক্রিয়া তৈরি হয়েছে।”

বর্তমানে এ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটি চীনে ৪০টিরও বেশি শাখা ও পণ্যের অভিজ্ঞতা উপভোগ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি চতুর্থ বৈশ্বিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স উত্পাদন কারখানা এবং প্রথম বৈদেশিক গবেষণাকেন্দ্র ও চীনে স্থাপন  করেছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের যোগদানের ২০ বছরে দেশটির অর্থনীতির পরিমাণ বিশ্বের ষষ্ঠ থেকে দ্বিতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে তার অবদান বেড়ে ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে তার অবদানও ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। চীনা বাজারে বৈদেশিক পুঁজির পরিমাণ অব্যাহতভাবে বাড়ছে। পুঁজি বিনিয়োগকারীরা উন্মুক্তকরণ বেগবান করার ক্ষেত্রে চীনের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা অনুভব করেছেন।

সিপিসি’র অষ্টাদশ কংগ্রেসের পর থেকে চীনের উন্মুক্তকরণ দ্রুততর হয়েছে এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ অব্যাহতভাবে সুষ্ঠু হয়েছে। ২০২০ সালে ‘বিদেশি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বিল’ কার্যকর হয়। তখন থেকে চীনের বাজারে বিদেশি বিনিয়োগ আরও সুবিধাজনক হয়েছে এবং সেবামূলক ব্যবস্থা আরও সুষ্ঠু হয়েছে। চীন টানা দু’বছরে বিশ্বের ব্যবসায়িক পরিবেশ সুবিন্যাসে সেরা দশ অর্থনৈতিক সত্ত্বার মধ্যে অন্যতম দেশ হয়েছে।

চাশেং বলেন, চীনা বাজারে প্রবেশ করার বছরগুলোতে চীন সরকারের দেওয়া চীনা ও বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য সমান সুবিধা উপভোগ করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, “এখন নিষেধাজ্ঞা অনেক কমেছে। বিদেশি বা দেশীয় প্রতিষ্ঠান যাই হোক না কেন, সবাইকে সমান সুবিধা দিচ্ছে চীন সরকার। এটি খুব বড় পরিবর্তন বলে আমি মনে করি। চীনের দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যা করতে পারে, আমরা বিদেশি প্রতিষ্ঠানও সেসব করতে পারি। যেমন, সরকারি ক্রয় বিষয়ক তালিকায় বিদেশি বিনিয়োগকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো অংশগ্রহণ করতে পারে।”

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের আওতা, ক্ষেত্র ও স্তর বেড়েছে। যা বিদেশি বিনিয়োগকারী ও বৈদেশিক পুঁজির শিল্পপ্রতিষ্ঠানেরবাজার সেবা এবং আইনি ও আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিতে পারবে। পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, চীনে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক পুঁজি ব্যবহারের পরিমাণ ২০১৩ সালের ১১,৭৫৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০২০ সালের ১৪,৪৩৭ কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। অধিক থেকে অধিকতর আন্তর্জাতিক গ্রুপ তাদের দপ্তর ও গবেষণা কেন্দ্র চীনে স্থাপন করেছে।

একই সঙ্গে বিদেশি ব্যবসায়ীদের চীনে বিনিয়োগের আস্থা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট জরিপ থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালে ৬০ শতাংশ ইউরোপীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান চীনে ব্যবসা বাড়ানোর ঘোষণা করেছে। ৬৬ শতাংশ মার্কিন শিল্পপ্রতিষ্ঠান চীনে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে বা করছে।  চা শেং বলেন, বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও চীনে তাদের ভবিষ্যত্ সুযোগ দেখতে পেয়েছে। তথ্য: সিএমজি