ন্যাভিগেশন মেনু

কোনও রোহিঙ্গাকে জোর করে ভাসানচরে পাঠানো হচ্ছে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী


ভাসানচরে কাউকে জোর করে নেয়া হচ্ছে না। যারা সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন, তাদেরই কেবল স্থানান্তর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। 

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) ভাসানচরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে একথা বলেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুনরায় উল্লেখ করেন, কাউকে জোর করে ভাসানচরে নেওয়া হবে না। আমার এখনও আগের অবস্থানেই আছি।

রোহিঙ্গাদের এ ধরনের স্থানান্তর নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, (রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ব্যর্থতার জন্য) জাতিসংঘ তাদের আশঙ্কা ও উদ্বেগের কথা মায়ানমারকে জানালে বাংলাদেশ সরকার খুশি হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার চায় না যে ভূমিধসের কারণে কক্সবাজার ক্যাম্পে মানুষ নিহত হোক।

কক্সবাজারের চাপ কমিয়ে রোহিঙ্গাদের ভাসানচর আরও উন্নত সুযোগ-সুবিধা দেবে বলে তিনি জানান।

মায়ানমার সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের আস্থার অভাবের কারণে ২০১৮ সালের নভেম্বরে এবং ২০১৯ সালের আগস্টে দুবার প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

এদিকে, আজ সকালে ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য উখিয়া থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। প্রথম দফায় উখিয়া ক্যাম্প থেকে ১০০ রোহিঙ্গা পরিবারকে বহনকারী ১০টি বাস ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। তবে, স্থানান্তর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে উখিয়া ক্যাম্প থেকে তাদের চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে আগামীকাল তাদের ভাসানচর নেয়ার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। কক্সবাজার থেকে প্রপ্ত খবরে জানা গেছে, স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গা পরিবারগুলোকে গতকাল বুধবার রাতে এবং আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ক্যাম্প থেকে নিয়ে উখিয়া কলেজমাঠে জড়ো করা হয়।

সেখান থেকে এই পর্যন্ত ১১টি বাস ভাসানচরে উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেও আরও ২০টিরও বেশি বাস সেখানে রয়েছে। যেকোনো সময় ভাসানচর গমনেচ্ছু আরও রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাসগুলো রওনা করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

ভাসানচরে প্রথম ধাপে যাওয়া রোহিঙ্গাদের রাখা হবে ৫ থেকে ১১ নম্বর ক্লাস্টারে। তিন মাসের মজুদ সক্ষমতার খাদ্য গুদামে প্রস্তুত ৬৬ টন খাদ্যপণ্য রয়েছে সেখানে। তবে প্রথম দিকে রোহিঙ্গাদের রান্না করা খাবার সরবরাহ করবে আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার। তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ করে ভাসানচরে গড়ে তোলা আশ্রয়ন প্রকল্পে ১৪৪০টি ঘর এবং ১২০টি সাইক্লোন সেন্টারে থাকতে পারবেন ১ লাখ ১ হজার ৩৬০ জন রোহিঙ্গা।

নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়েছেন। পাচ্ছেন খাদ্য, চিকিৎসা। এমনকি শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা আছে। রোহিঙ্গাদের জীবন যাপন নির্বিঘ্ন করতে আগেই ভাসানচরে পৌঁছেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় আড়াইশ সদস্য এবং ২২ এনজিওর কর্মকর্তারা। প্রথম দলের বসবাস শুরুর পর, কক্সবাজারের ক্যাম্পে থাকা মিয়ানমারের বাকি নাগরিকরাও ভাসানচরে আসতে আগ্রহী হবেন বলে মনে করেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।

২০১৭ সালের আগস্ট পরবর্তী সময়ে মায়ানমার সরকারে অব্যাহত দমন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে এদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয় ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। সে থেকেই তারা বাংলাদেশে সরকারের আশ্রয়ে রয়েছে।

এমআইআর/ওআ