ন্যাভিগেশন মেনু

জার্মানিতে ‘লকডাউন লাইট’ শুরু


ইউরোপে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়েছে। প্রতিদিন কয়েক লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। মহামারি ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকোতে সোমবার (২ নভেম্বর) থেকে ‘লকডাউন লাইট’ কার্যকর হয়েছে জার্মানিতে। ইউরোপের অনেক দেশে আরও কড়া বিধিনিয়ম চালু করা হয়েছে। খবর ডয়েচে ভেলের।

গত কয়েক মাসে বিশেষ চাপ অনুভব না করলেও আশঙ্কাজনক হারে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সোমবার থেকে এক মাসের জন্য আরও কড়া বিধিনিয়ম চালু করা হচ্ছে। চার সপ্তাহের জন্য এই ‘লকডাউন লাইট’ মানুষের মেলামেশা যতটা সম্ভব কমিয়ে এনে সংক্রমণের গতির পথে বাধা সৃষ্টি করবে, এমনটাই আশা কর্তৃপক্ষের।

মানুষকে বোঝানো হয়েছে যে, এখন এমন ‘ত্যাগ’ স্বীকার করলে ডিসেম্বর মাসে বড়দিন উৎসব কিছুটা হলেও পালন করা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, রবার্ট কচ ইনস্টিটিউটের সূত্র অনুযায়ী রোববারও জার্মানিতে নতুন করে ১৪ হাজার ১৭৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ গত কয়েক দিনের তুলনায় সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে।

বার-রেস্তোরাঁ, সিনেমা-থিয়েটার ইত্যাদি বন্ধ হওয়ার আগে সপ্তাহান্তে জার্মানির মানুষ যতটা সম্ভব সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নিয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে মিউনিখ ও বার্লিন শহরে বাড়তি উৎসাহ চোখে পড়েছে।

সোমবার থেকে মিউজিয়াম ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সব অনুষ্ঠানও বন্ধ থাকছে। শরীরচর্চা বা শরীরের যত্ন নিতে জিম, সুইমিং পুল, বিউটি ও মাসাজ পার্লার, উলকি আঁকার দোকানও খুলতে পারবে না। তবে চুল কাটার সেলুন খোলা থাকবে। এমনকি স্টেডিয়ামে গিয়ে বুন্দেস লিগার ফুটবল ম্যাচ দেখারও উপায় থাকবে না।

মোট কথা প্রকাশ্যে সর্বোচ্চ দুটি পরিবারের মধ্যে দশ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এত বাধা সত্ত্বেও জীবনযাত্রা ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপ চালু রাখতে স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন খোলা থাকছে।

বেশিরভাগ দোকানবাজারও খোলা থাকছে, যদিও বদ্ধ জায়গায় ক্রেতাদের সর্বোচ্চ সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মাথা গুনে দোকানে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। যাদের পক্ষে ঘরে বসে অফিস করা সম্ভব, তাদের দফতরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

বাকি বিশ্বের তুলনায় ইউরোপের করোনা পরিস্থিতি অনেক অবনতি হয়েছে সম্প্রতি। মাত্র পাঁচ সপ্তাহের ব্যবধানে ইউরোপে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী রোববার আক্রান্তদের সংখ্যা এক কোটির মাত্রা অতিক্রম করেছে। অথচ সেখানে ৫০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হতে প্রায় নয় মাস সময় লেগেছিল।

বিশ্বের দশ শতাংশ জনসংখ্যা বাস ইউরোপে। অথচ এ পর্যন্ত মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ২২ শতাংশ ইউরোপের। গত মাসে লাতিন আমেরিকা ও এশিয়া মহাদেশেও করোনা সংক্রমণের সংখ্যা এক কোটি ছাড়ায়।শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ লাখেরও বেশি।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় জার্মানি ছাড়াও ফ্রান্স, ব্রিটেন ও পর্তুগালের মতো দেশ নানা মাত্রায় লকডাউন চালু করেছে। স্পেন ও ইতালিতে আরও কড়া বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে। এমন পদক্ষেপের মেয়াদ শেষ পর্যন্ত কত বাড়ানো হবে, সে বিষয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে।

ইউরোপের কিছু কিছু দেশের সরকার কমপক্ষে আগামী বছরের বসন্তকাল পর্যন্ত বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতির আশা দেখছে না। পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত (ইইউ) দেশগুলো নাগরিকদের সমস্যা কমাতে ব্যর্থ হলে ব্যাপক অসন্তোষের আশঙ্কা করছে কিছু মহল।

ওআ/