ন্যাভিগেশন মেনু

১২ সপ্তাহের মধ্যে দেশে সর্বাধিক রোগী শনাক্ত


দেশে গত এক দিনে আরও ২ হাজার ৫২৫ জনের শরীরে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা গত প্রায় তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর আগে এর চেয়ে বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল গত ২ সেপ্টেম্বর। 

সেদিন ২ হাজার ৫৮২ জন রোগী শনাক্তের তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত নতুন ২ হাজার ৫২৫ জনকে নিয়ে দেশে মোট ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। 

এদিকে করোনা রোধে সর্বোচ্চ জরিমানায় কাজ না হলে মাস্ক না পরার অপরাধে জেল দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

সোমবার (৩০ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা জানান।এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। 

গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আগেই আমরা বলেছি, এই সপ্তাহ থেকে (যারা মাস্ক পরছে না তাদের বিরুদ্ধে) আরেকটু স্ট্রং অ্যাকশনে যাব। 

আমার মনে হয়, ঢাকার বাইরে পজিটিভ; ডিসিরা বলছেন, জেলা সদরে মানুষ মোটামুটি কেয়ারফুল (সচেতন) হচ্ছে। ঢাকা শহরে বোধহয় এখনও পুরোপুরি কেয়ারফুল হয়নি; তবে মোটামুটি একটা বার্তা যাচ্ছে যে, (মাস্ক না পরলে) ফাইন হয়ে যাবে, ফাইন (জরিমানা) দিতে হবে ৫০০ টাকা। 

বলেছি এখন থেকে ম্যাক্সিমাম ফাইন করো, না হলে আমরা আরও ইনস্ট্রাকশন দেব। বলেছি সর্বোচ্চ জরিমানা করতে।তিনি বলেন, ‘আস্তে আস্তে আমরা...তারপর জেলে যেতে হবে। 

কী করবে, না যদি শোনে, আমরা তো উই ক্যান নট টেক রিক্স (ঝুঁকি নিতে পারি না), আমাদের যতটুকু সম্ভব করতে হবে, আমরা বলে দিয়েছি। আমরা আর সাত থেকে ১০ দিন দেখব, তারপর ইনস্ট্রাকশন দিয়ে দেব- আরও কঠোর পানিশমেন্টে (শাস্তি) যাও। যথাসম্ভব বেশি করে ফাইন করা হবে এবং স্ট্রং পানিশমেন্ট দেয়া হবে।’ 

এদিকে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া অক্সফোর্ডের তৈরি করোনাভাইরাসের তিন কোটি ভ্যাকসিন বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। 

আর ২৪ ঘন্টায় এ ভাইরাসে আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬৪৪ জনে।বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তা সাড়ে ৪ লাখ পেরিয়ে যায় ২৪ নভেম্বর। এর মধ্যে গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৪ নভেম্বর তা ছয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। 

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৬তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৩তম অবস্থানে।বিশ্বে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতিমধ্যে ৬ কোটি ২৭ লাখ পেরিয়েছে; মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৪ লাখ ৬০ হাজার। 

এদিকে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেটগুলোতে উপচেপড়া ভীড়, গায়ে গা ঘেঁষে মানুষ চলাফেরা করছে। গণপরিবহনেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। 

ইউরোপে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ (সেকেন্ড ওয়েভ) চলছে। আগের চেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশেও নমুনা পরীক্ষা, রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু বাড়ছে। তবে রোগী সুস্থতার হারও বেশ আশাব্যঞ্জক।  

এস এস