ন্যাভিগেশন মেনু

তারকাদের অন্যরকম পূজা


সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দেশীয় তারকাদের অনেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বী। এ উৎসবের সময়টায় পরিবারের সদস্য ও কাছের মানুষদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন তারা। তবে এবারে করোনার কারণে আনন্দ অন্য সব বছর থেকে একটু ব্যতিক্রম তাদের আনন্দোৎসব। তারকাদের পূজার আনন্দ নিয়ে আজকের আয়োজন …

পূজায় কোনো বিশেষ পরিকল্পনা নেই কুমার বিশ্বজিৎ-এর

করোনার এই সময় এবারের পূজা নিয়ে তেমন বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নেই। পূজা নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে। প্রতি বছর পূজায় মা অনেক কিছুরই আয়োজন করতেন। এবার সেটি আর হবে না। তাছাড়া গত কিছুদিনের মধ্যে আমার কয়েকজন নিকটাত্মীয় মারা গেছেন। 

সেই শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এর পাশাপাশি করোনাভাইরাস তো আছেই। তাই সব কিছুতেই একটি বিষন্নভাব অনুভব করছি। এবার পূজায় আমার কোনো আয়োজন কিংবা বিশেষ পরিকল্পনা নেই। ঘরেই থাকব, তাই হয়তো টিভিতে পূজার আনুষ্ঠানিকতা দেখতে হবে।

মা ছাড়া প্রথম পূজা অপু বিশ্বাসের

মা কাশফুল অনেক পছন্দ করতেন। পূজার এই সময়টায় আমি মাকে নিয়ে কাশফুল দেখতে যেতাম। এবারও ইচ্ছা ছিল মাকে নিয়ে কাশফুল দেখতে যাব। কিন্তু এবারও কাশফুল ফুটেছে কিন্তু মা আমাদের সঙ্গে নেই। তাই এবারের পূজায় তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই বললেই চলে।

অষ্টমীর দিন আমি আর মা একই রকম জামা পরতাম। মনের মতো করে মা-মেয়ে সাজতাম। অনেক পূজামন্ডপে ঘুরে বেড়াতাম। এসব মনে হলে অনেক কষ্ট হচ্ছে আমার। তবে অষ্টমীর দিন ছেলেকে নিয়ে অঞ্জলি দিতে যাব। আগের মতো ধুমধাম করে পূজা পালনের কোনো ইচ্ছা নেই এবার। এ ছাড়া করোনার কারণে পুরো বিশ্ব আজ স্তব্ধ। এবার তেমন করে পূজা পালিত হবে না সারা বিশ্বে।

পূজার আনন্দ মিস করবেন বিদ্যা সিনহা মীম

করোনার কারণে এবার আর গ্রামের বাড়িতে পূজা করতে যাওয়া হলো না। এ কারণে একটু খারাপ লাগছে। ছোটবেলা থেকেই পূজার প্রতি আমার অন্যরকম দুর্বলতা কাজ করে। এই কয়টা দিন খুব আনন্দ করে কাটাই। অভিনেত্রী হওয়ার আগে ইচ্ছামতো ঘুরতে পারতাম। এখন আর পারি না। ভাবছি এবার অষ্টমীতে সাদা-লাল শাড়ি পরব। 

এ দিনের বিশেষত্ব হলো কুমারী পূজা। সবচেয়ে জমকালো উৎসবের দিন। নবমীর দিনেও এই বর্ণিল ব্যাপারটা থাকে। নবমীতে সালোয়ার-কামিজ পরব। দশমীতে লাল থ্রি-পিস পরব। লাইট মেকআপ করে চুলে খোঁপা বাঁধব। পূজার চার দিনের যে কোনো এক দিন দু-একটি পদ রান্না করার ইচ্ছা আছে। তা হতে পারে পায়েশ আর সবজি কারি।

নানা ব্যস্ততায় পূজা কাটবে চঞ্চলের  

এবার আর আগের অবস্থা নেই। সবাই করোনা নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। অনেকে এখনো ঘর থেকে কাজ করার চেষ্টা করছেন। আগে পূজায় পাবনায় গ্রামের বাড়ি যেতাম। সবাই মিলে আনন্দ ভাগাভাগি করতাম। দশমী পার করে ঢাকায় ফিরতাম। এবারও পাবনায় যাব। সেখানে পরিবার নিয়ে আনন্দে মেতে উঠব। পূজা এলে আনন্দের পূর্বশর্ত হচ্ছে নতুন জামাকাপড় কেনা। 

নতুন জামা পরে মন্ডপে গিয়ে দুর্গা মায়ের সঙ্গে দেখা করা। শুটিংয়ের ব্যস্ততায় কেনাকাটা করা সম্ভব হয় না। এ কাজটা বরাবরই আমার অর্ধাঙ্গিনী করে থাকেন। নানা ব্যস্ততায় সময় পার হচ্ছে, ঢাকের তালে তালে আগের মতো আর প্রতিমা বিসর্জন দিতে নৌকায় ওঠা হয় না। এরপরও পূজার আনন্দে এতটুকু ছেদ পড়েনি।

পূজায় বাসাতেই থাকবেন ঊর্মিলা শ্রাবন্তী

এখনকার পূজায় ঘোরাঘুরি একটু কঠিন। যেটা একই সঙ্গে ভালো লাগে, আবার খারাপও লাগে। যখন বাবাকে নিয়ে বের হতাম, তখন একটু খারাপ লাগত। মনে হতো, বাবাকে একটু সময় দিই, তাঁর সঙ্গে বসি। আবার এনজয়ও করি; যখন মানুষ আসে, কথা বলে; তখন ভালো লাগে।

দুই বছর আগে পূজার মধ্যে বাবা মারা গেল। এ জন্য পূজা আমার জন্য কষ্টের একটা ফিলিংস। পূজার সপ্তমী দিনে আমার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী। এ জন্য পূজার ফিলিংস অনেক আগেই ভুলে গেছি। এবারের পূজায় বাসাতেই থাকব, পূজার মধ্যে কাজও (শুটিং) আছে। যেখানে লোকসমাগম কম, মাকে নিয়ে সেখানে একটু বের হব।

এবারের পূজার আনন্দ মাটি পূজা চেরীর 

আমাদের গ্রামের বাড়ি খুলনার গাজীরহাটে। সবচেয়ে বড় করে দুর্গাপূজা হতো। ছোটবেলায় সেখানেই কেটেছে আমার পূজার সুন্দর সময়। কিন্তু কাজ থাকার কারণে দেশে যাওয়া না হলেও ঢাকার বিভিন্ন পূজামন্ডপে নিঃসংকোচে ঘুরে বেড়াতাম। তবে এবার ঢাকার মন্ডপে ঠাকুর দেখতে গেলেও সেই প্রাণখোলা পরিবেশকে খুবই মিস করব। আর মাস্ক পরে সোশ্যাল ডিসটেন্স রেখে মন্ডপে মন্ডপে ঘুরতে হবে। এটা কেমন যেন অস্বস্তিকর!

বেশ কয়েক বছর হলো ব্যস্ততার কারণে পূজায় গ্রামের বাড়ি যেতে পারি না। ঢাকার মধ্যে ঢাকেশ্বরী মন্দির, বনানী পূজামন্ডপে ঘোরা হয়। পূজায় লাল-সাদা শাড়ি পরতে খুব ভালো লাগে। শুধু নিজের জন্য নয়, বাবা-মা, ভাইয়া, ফুফু-ফুফা, কাজিনসহ অনেককেই পূজার উপহার দিয়েছি। তবে করোনা এবারের পূজার আনন্দ মাটি করে দিয়েছে। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কিছুই করা হবে না।

ওআ/