ন্যাভিগেশন মেনু

তাড়াশে মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ


সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মাদরাসাপড়ুয়া ছাত্রদের জীবিত অভিভাবকদের মৃত দেখিয়ে এতিমদের ভুয়া তালিকা তৈরি করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে দোবিলা ইসলামপুর আলিম মাদরাসার সুপার ও এতিমখানার পরিচালক মো. আবু বক্কার সিদ্দিকের বিরুদ্ধে।

এতিমখানাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত এতিমদের খাবার এবং পোশাক বাবদ আসা লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ ভুয়া তালিকায় ছাত্রদের জীবিত অভিভাবকদের।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার দোবিলা ইসলামপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার পাশে ১৯৯৬ সালে এতিমখানাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ২০০৪ সাল থেকে সরকারি অনুদান পাওয়া শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সরকারি অনুদানের টাকার কোনও হিসাব দিতে পারেনি এতিমখানা কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় আয়নাল হোসেন, ইউসুফ আলী, ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক, ফরহাদ আলী ও আক্তার হোসেন অভিযোগ করেন, এতিমখানায় একটি সাইনবোর্ড ছাড়া এখন আর কোনো কার্যক্রম নেই। এতিমখানার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সাধারণ মানুষের দান ও সরকারি অনুদানের দেওয়া এতিমদের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছেন মাদরাসার সুপার আবুবক্কার সিদ্দিক। বিভাগীয় পরিদর্শন কিংবা প্রশাসনের তদারকিকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েকজন শিশুকে উপস্থিত করে তাদের ছবি তুলে রাখা হয়।

দেবিপুর গ্রামের আব্দুস সালাম জানান, 'আমার ছেলে মো. খাদেমুল ইসলাম দোবিলা ইসলামপুর মাদরাসায় ২০০৬ সালে ষষ্ট শ্রেনিতে পড়ার সময়ে সুপার আমাকে মৃত দেখিয়ে আমার ছেলেকে এতিম শিশু হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। পরে সরকারি-বেসরকারি বরাদ্দকৃত টাকা তুলে সে আত্মসাৎ করে।'

একই গ্রামের তজিম উদ্দিন, কালীদাসনীলি গ্রামের ফারুক হোসেন, আনোয়ার হোসেন, হাবিবুর রহমানকে মৃত দেখিয়ে তাদের মাদরাসাপড়ুয়া ছেলেদের এতিম শিশু দেখিয়ে অনুদানের লাখ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন মাদরাসা সুপার ও এতিমখানা কমিটির সভাপতি।

চকজয় কৃঞ্চপুর গ্রামের মো. জাবেদ আলী, দেবিপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল কুদ্দুস ও আমির উদ্দিন জানান, 'বুঝলাম না, আমরা এখন জীবিত মানুষ নাকি মৃত মানুষ। আমাদের ছেলেদের মাদরাসায় পড়তে দিলাম। অভিভাবকরা জীবিত থাকা সত্বেও এতিমখানার সুপার ও সভাপতি কাগজে কলমে আমাদেরকে মৃত দেখিয়ে ছেলেদের অনাথ ও এতিম তালিকাভুক্ত করে সরকারি অনুদান আত্মসাৎ করছে।'

দাবিলা ইসলামপুর সিনিয়র আলিম মাদরাসার সুপার ও এতিমখানার পরিচালক মো. আবু বক্কার সিদ্দিক এ বিষয়ে 'কোনও প্রতিবেদন না ছাপানোর অনুরোধ' করে বলেন, 'লেখালেখি করলে আমার সুনাম ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হবে।'

তাড়াশ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, আমি যোগদানের পর ওই এতিমখানা কোনও অনুদান পাননি। এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এমএসএম/সিবি/এডিবি/