ন্যাভিগেশন মেনু

দর্শনা রেলবন্দর থেকে ২০ কোটি টাকার রাজস্ব আয়


প্রাণ ফিরেছে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনের। ভারত থেকে রেলপথে নিয়মিত মালবাহী ট্রেনে পাথর, ভুট্টা, ফ্লাইএ্যাশ, পিয়াজ, শুকনো মরিচ ও আদা আমদানি করা হচ্ছে।

গত আড়াই মাসে সরকার দর্শনা রেলবন্দর থেকে প্রায় সাড়ে ২০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করেছে। আড়াই মাসে ভারত থেকে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৭ দশমিক ৩ মেট্রিক টন পন্য আমাদানি করেছে বাংলাদেশ।

এর আগে করোনাভাইরাসের কারণে রেলপথ দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি ২ মাস বন্ধ থাকায় সরকার প্রায় ১৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে ভারত থেকে রেলপথে পণ্য আসা বন্ধ হয়ে যায়। সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনে নেমে আসে নিরাবতা। এ কারণে স্টেশনের মালামাল উঠা-নামানোর কাজের সাথে জড়িত প্রায় ২ শতাধিক শ্রমিক একবারে কর্মহীন হয়ে পড়েন।

করোনাকালীন সময়ে দেশের বাজারে পেয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকার ভারত থেকে ব্যাসায়ীদের শুল্কমুক্ত পেয়াজ আমদানি করার সুযোগ দেয়। ফলে ৯ মে প্রথম চালানে ভারত থেকে ৪২টি বগিতে পিয়াজ নিয়ে একটি মালবাহী ট্রেন দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর থেকে নিয়মিত আসতে থাকে পাথর, ভুট্টা, ফ্লাইএ্যাশ, পিয়াজ, শুকনো মরিচ ও আদা। ভারত থেকে আসা এসব পন্য দর্শনা রেল স্টেশন এবং দেশের অন্য স্থানেও খালাস করা হয়।

গত মে মাসে ভারত থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনে ২৩টি মালবাহী ট্রেন আসে। এর মধ্যে ৪১ হাজার ৯৬৬ দশমিক ২ মেট্রিক টন পিয়াজ, ১০ হাজার ১৫ দশমিক ৪ মেট্রিক টন পাথর, ২ হাজার ৪৬৯ দশমিক ৬ মেট্রিক টন ফ্লাইএ্যাশ, ২ হাজার ২৪২ মেট্রিক টন শুকনো মরিচ ও ২৩৬ মেট্রিক টন আদা আমদানি করা হয়। এর থেকে সরকার সাড়ে ৪ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে।

গত জুন মাসে ৫৪টি মালবাহী ট্রেন বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এতে ১ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ দশমিক ২ মেট্রিক টন পণ্য দেশে আসে। এর মধ্যে ৫৯ হাজার ৪৮৪ দশমিক ৭ মেট্রিক টন পিয়াজ, ১২ হাজার ৩৪৩ দশমিক ৮ মেট্রিক টন ভুট্টা, ২৪ হাজার ২৭৮ মেট্রিক টন ভুসি, ৫ হাজার ৭৭৬ দশমিক ২ মেট্রিক টন পাথর, ২ হাজার ৪৭৩ দশমিক ৮ মেট্রিক টন ফ্লাইএ্যাশ ও ২৪ হাজার ৮৭৬ মেট্রিক টন শুকনো মরিচ আমদানি করা হয়। এ মাসে সরকার ৯ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে।

২৩ জুলাই পর্যন্ত ভারত থেকে ৪৭টি মালবাহী ট্রেন বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ট্রেনে পাথর, ভুট্টা, ফ্লাইএ্যাশ, পিয়াজ, শুকনো মরিচ ও আদা আসে। এখান থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয় ৭ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে দর্শনা সিঅ্যান্ডএফের সভাপতি আবুল কালাম বলেন, ‘করোনার কারণে বন্ধ ছিল পণ্য আসা। এখন থেকে নিয়মিত পণ্য আসায় সরকার রাজস্ব পাচ্ছে।’

দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনের নিয়ন্ত্রক মীর লিয়াকত আলি বলেন, ‘সরকারি ঘোষণা আসার পর থেকে রেলপথে পণ্য আসা বন্ধ ছিল। এখন নিয়মিত পাথর, ভুট্টা, ফ্লাইএ্যাশ, পিয়াজ, শুকনো মরিচ ও আদা আসছে। রেলপথে যোগাযোগ সহজ ও খরচ কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে আসতে আগ্রহী বেশি হন।’

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ ছিল রেলপথ দিয়ে পন্য আমদানি। যার কারণে সরকারের প্রায় ১৫ কোটি টাকার মত রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। দুই মাসের রাজস্ব ঘাটতি এখন পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।’

এমআইআর/এডিবি