ন্যাভিগেশন মেনু

দিনাজপুরে অধিক লাভজনক হওয়ায় বাড়ছে পান চাষ


ধান, আলুসহ অন্যান্য ফসলের চেয়ে পান চাষ লাভজনক হওয়ায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে দিন দিন বাড়ছে পান চাষ। উপজেলার বেশকিছু গ্রামের মাঠে নিজ মেধা ও উদ্যোগে পান চাষ করে ব্যাপক সফলতা পাচ্ছেন কৃষকরা।

বিঘাপ্রতি পানের বরজে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ করে পরবর্তী বছর থেকে প্রতি বছর লাভ করছেন ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা। এখানকার উৎপাদিত পান উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে ৭৫ ভাগ পান সরবরাহ করা হচ্ছে আশেপাশের বিভিন্ন জেলাগুলোতে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ‘এ বছর উপজেলায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে ৭ একর জমিতে পানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার ইসুবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণনগর গ্রামেই ৮৫ ভাগ পান চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার ১৮টি পরিবার এই পান চাষের সাথে জড়িত।’

এ বিষয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘প্রতিবিঘা জমির পানের বরজে মাটির আইল, বেড়া, ছাউনি, শ্রমিক, পানের লতাসহ ১ লাখ টাকা প্রাথমিক অবস্থায় খরচ হয়। পরের বছর থেকে খরচ খুবই সামান্য হয়। কারণ একটি পানের বরজ তৈরি করার পর মাটির আইল, বেড়া, ছাউনি সংস্কার ছাড়া ৪০-৪৫ বছর পর্যন্ত পানের বরজ অক্ষুন্ন থাকে। সেখান থেকে পান পাওয়া যায়। একটি পানের বরজ থেকে উৎপাদন বেশি হলে ২ পোয়া (১২৮টি) পর্যন্ত পান পাওয়া যায়। বড় পান পুরাতন ১ পোয়া ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা, মাঝারি পান ১ পোয়া দেড় হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার এবং ছোট পান ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।’

পান চাষী লক্ষী কান্ত বলেন, ‘পান চাষ করেই আমার সংসার চলে, আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনেই বরজে কাজ করি। এখান থেকেই আয় করে সংসারের খরচসহ সন্তানদের লেখাপড়া খরচ চালাই। চিরিরবন্দরে দুই প্রকার পান চাষ হয়, মিষ্টি পান ও সাচি পান। তবে উপজেলায় মোট চাষের ৭০ ভাগই মিষ্টি পান।’

পান চাষী সনাতন রায় বলেন, ‘দক্ষিণনগর গ্রামের পান চাষীরা বংশীয় ভাবে বাপ-দাদার পুরোনো পেশাকে আকঁড়ে ধরেই পানের বরজে পান চাষ শুরু করেন। গ্রাম কিংবা শহরে অতিথি আপ্যায়নে এখানকার পান সুস্বাদু হওয়ায় এ পানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে এই পান চাষে এই এলাকায় অনেকই সাফল্য অর্জন করেছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান জানান, চিরিরবন্দরের মাটি পান চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত হওয়ায় এখানে দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর পরিমাণে পানের চাষ হয়ে আসছে। বর্তমানে এই এলাকার পান চাষীরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পানের চাষ করছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সকল প্রকার পরমর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।

এমএএস/এমআইআর/এডিবি