ন্যাভিগেশন মেনু

সাংবাদিকতা ব্যবসা নয়, একটি দায়িত্বশীল পেশা

দেশের প্রতি সিকদার গ্রুপের অবদান অপরিসীম


সংবাদিকতা হচ্ছে এমন একটি দায়িত্বশীল পেশা, যেখানে সুনির্দিষ্ট এথিক্স মেনে চলতে হয়। সাংবাদিকদের যেমন জানার অধিকার আছে তেমনি রয়েছে বিশ্লেষণ করা বা উৎস তথ্যের যাচাই করার বিষয়টিও।

কোন গণতান্ত্রিক সমাজে সাংবাদিকতার মৌলিক কাজ হচ্ছে জনসাধারণের রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক, সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তাদের যেসব তথ্য প্রয়োজন, সেগুলো পরিবেশন করা, যা সত্যিই ঘটেছে। উপযুক্ত প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ সে সম্পর্কে বিস্তারিত হুবহু বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষকে অবহিত করাকে সাংবাদিকতা বলে। আর এই সাংবাদিকতা পেশাটি যেমন দায়িত্বশীল তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ। সাংবাদিকদের নৈতিকতা, সততা, বস্তুনিষ্ঠতা ও পক্ষপাতহীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা একান্তই বাঞ্ছনীয়। সাংবাদিকতায় স্বাধীনতার বিপরীতে জবাবদিহিতাও খুব জরুরি বিষয়।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে অনুমান-নির্ভর বা বানোয়াট নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করা শুধু সংবাদিকতার নীতিমালার বরখেলাপই নয় প্রচলিত আইনেও গর্হিত অপরাধ। বিশেষ করে স্পর্শকাতর কোন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সাংবাদিককে অতি সাবধানী হতে হয়। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে যেমন নির্ভরযোগ্য সূত্রের সাহায্য নিতে হয়, তেমনি বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় যাচাই করে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে হয়।

কিন্তু আজকাল আমরা কি দেখতে পাচ্ছি? আমাদের দেশের সাংবাদিকতায় কিছু ‍কিছু ক্ষেত্রে যেন নীতিহীনতা প্রবলভাবে জেঁকে বসেছে৷ এটা যতটা না অদক্ষতার কারণে, তার চেয়ে বেশি স্বার্থ, সুযোগ-সুবিধা ও আর্থিক লাভের কারণে হয়েছে৷

আর এই নীতিহীন সাংবাদিকতার বিস্তারের কারনেই হয়তো সাংবাদিকদের প্রতি মানুষের অতিতের সেই বিস্ময়মিশ্রিত শ্রদ্ধাবোধও হারিয়ে যাচ্ছে৷

হলুদ সাংবাদিকতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই কম-বেশি জানি। সম্প্রতি সেই হলুদ সাংবাদিকতায় জড়িয়ে কয়েকটি সংবাদপত্র ও তাদের সাংবাদিকরা একটি স্বনামধন্য কোম্পানির সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে, যা তদন্তাধীন। কিন্তু তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই একটি কুচক্রি মহলের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কিছু সংবাদপত্র অতি উৎসাহে ফলাও করে এ বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন শুরু করেছে।

মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে এক খবরে বলা হয়েছে, একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের পরিচালকরা একটি ব্যাংকের এমডিকে বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছে। আইনতঃ অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, এমনটি বলা যাবে না। তাই তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার আগে এ নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করলে তা মামলাকে প্রভাবিত করতে পারে।  

খুব সহজে অনুমেয় যে, ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিতে হলে হুমকি নয় বরং ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে হয়। ঋণ চেয়ে কেউ যে ব্যাংক কর্মকর্তাদের গুলি করার মত ঘটনা ঘটাবেন না - তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হতে হয় না। তাই ঘটনাটি যে মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

অপর এক খবরে বলা হয়েছে, পূর্বাচলের কোন এক জায়গায় ওই ব্যাংকের এমডিকে গুলি করা হয়। তদন্তে কি তা পাওয়া গেছে? গুলি ছুঁড়লে তার আলামত থাকে। এসব ক্ষেত্রে তদন্ত রিপোর্ট ছাড়া কেবলমাত্র এক পক্ষের বক্তব্য নিয়ে নিউজ করা নৈতিকতাবিবর্জিত ।

প্রশ্ন জাগে, তিনি সেই জায়গায় কেন গিয়েছিলেন? ঋণ দেয়ার ইচ্ছা না থাকলে তিনি ঢাকা থেকে অতদূর কেন গিয়েছিলেন সে প্রশ্নও থেকে যায়। বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় যা লেখা হয়েছে তা মনগড়া বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এ সকল ভিত্তিহীন খবর পরিবেশন করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সুনাম সাময়িকভাবে ক্ষুণ্ন করা যায়, কিন্তু তাতে পত্রিকার বা নিউজ মিডিয়ারই বদনাম হয় এবং গণমাধ্যম বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়।

আজ থেকে ১০ বছর আগের বিমানবন্দরের রেকর্ড দেখলে জানা যাবে, থাইল্যান্ডে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকার কারণে শিকদার গ্রুপের পরিচালক ও কর্মকর্তাদের প্রায় প্রতি সপ্তাহে ব্যাংককে যেতে হতো। সে ক্ষেত্রে তারা এয়ারলাইন্স ও নিজস্ব ক্যারিয়ার ব্যবহার করে থাকেন।

চিকিৎসার জন্য তাদের পরিবারের প্রায় সকলের ব্যাংককের বিখ্যাত হাসপাতালে অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকে। সেই খবরটি পুরোপুরি না জেনে শিকদার গ্রুপের পরিচালকের বিরুদ্ধে অনুমান-ভিত্তিক তাদের সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য মনগড়া খবর পরিবেশন করা বেআইনি; দেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।

দেশের উন্নয়নে এবং মানব-হিতৈষি কর্মকাণ্ডে শিকদার গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা দেশবাসীর অজানা নয়। মানুষের জন্য সেবামূলক বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে শিকদার গ্রুপের। এর মধ্যে শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র হাসপাতাল যেখানে খুব কম খরচে বিদেশি ডাক্তার দ্বারা হার্ট অপারেশন করা হয়। এ সুযোগ বাংলাদেশের অন্য কোন হাসপাতালে নেই।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শান্তি সমাবেশে বিএনপি জামায়েতের ২১শে আগস্ট বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় ব্যাপক হতাহত হয়। সে সময় শত শত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য শিকদার মেডিকেল উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সেখানে আজও লেখা আছে, শেখ কামাল ফ্লোর, শেখ জামাল ফ্লোর ও শেখ রাসেল ফ্লোর।

উল্লেখ্য, গ্রেনেড হামলার পর সকলেই জানতো তৎকালীন সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে এই গ্রেনেড হামলা হয়েছে। যার জন্য ঢাকা শহরে কোন হাসপাতালে আওয়ামী লীগের নামকরা দুই-একজন নেতা ছাড়া বিএনপি-জামায়েতের বাধার মুখে অন্য কোন সাধারণ নেতা-কর্মীকে ভর্তি করা সম্ভব হয়নি।

শিকদার গ্রুপের অবদান দেশের প্রতি, সাধারণ মানুষের প্রতি, স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষের প্রতি মোটেও অকিঞ্চিৎকর নয়। যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে শিকদার গ্রুপের বিরুদ্ধে মনগড়া সংবাদ পরিবেশন করেছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলব, পাহাড়ে ঢিল মারলে ঢিলটাই হারিয়ে যায়। কাঁচের ঘরে বসে ঢিল মারলে নিজের ঘর চূর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে যায়।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ও তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত জয়নুল হক শিকদার শুধু দিতে জানেন, নিতে নয়। ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা জয়নুল হক শিকদার। ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে কখনই ঋণ নেননি তিনি; দেশের প্রচলিত আইনে উদ্যোক্তা পরিচালকরা ঋণ নিতে পারেনও না। খবর পরিবেশনের আগে সেই তথ্য জানা দরকার ছিল। জয়নুল হক শিকদার দেশে বিনিয়োগকারী তৈরির জন্য বহু প্রতিষ্ঠানকে হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন। কারণ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা অপরিসীম।

উল্লেখ্য, শিকদার গ্রুপের হাত ধরে আধুনিক স্থাপত্যশিল্পের নতুন এক উচ্চতায় প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। রাজধানীর পূর্বাচলে মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিতে ৫২ তলা ভবন, ‍মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিতে ৭১ তলা ভবন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে ৯৬ তলা ভবনের সমন্বয়ে গড়ে উঠছে বঙ্গবন্ধু ট্রাই-টাওয়ার। 

এছাড়া দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং কর্মসংস্থান তৈরিতে বিশাল ভূমিকা রাখছে শিকদার গ্রুপ অব কোস্পানিজ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও তাদের বিনিয়োগ রয়েছে। 

রুপকল্প ২০৪১ মধ্যআয়ের বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তরের স্বপ্ন।  সেই স্বপ্ন পূরণে বড় অবদান রাখতে সঙ্গী হয়েছে শিকদার গ্রুপ। পূর্বাচল নতুন শহরে সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্টে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু ট্রাই-টাওয়ার। যেখানে থাকছে বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম ১১১ তলা ভবন। এছাড়া থাকছে ভাষা আন্দলনের স্মৃতিবিজড়িত ৫২ তলা-বিশিষ্ট ল্যাঙ্গুয়েজ টাওয়ার। মহান মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্মারক হিসেবে নির্মিত হবে ৭১ তলা-বিশিষ্ট লিবারেশন টাওয়ার। আরও থাকছে ৯৬ তলা-বিশিষ্ট লিগ্যাসি টাওয়ার।  প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার দায়িত্ব গ্রহণের বছর ১৯৯৬ সালের স্মৃতি স্মারকও নির্মিত হবে। এছাড়া থাকছে শহীদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে অবকাঠামো। থাকছে ৪০ তলার আরও ৪৯ টি ভবন।

এসব করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান তৈরিতে ভূমিকা রাখছে শিকদার গ্রুপ অব কোস্পানিজ।  শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অবদান রাখছে প্রতিষ্ঠানটি। তৈরি করেছে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন।

এছাড়া দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে কয়েক দশক ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে শিকদার রিয়েলে এস্টেট কোম্পানিজ। দেশের বাইরে থাই্ল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে সিকদার গ্রুপের বিনিয়োগ রয়েছে।

সব মিলিয়ে ৫০ হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকার সংস্থান করেছে শিকদার গ্রুপ। নতুন প্রজেক্টগুলোতে আরও ৪০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। শিকদার গ্রুপের এই মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের মানুষ একদিন গর্ব করে বলবে আমরাও পারি।

শরীফ শাহাব উদ্দিন, প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশ পোস্ট