ন্যাভিগেশন মেনু

আজ নাটোর মুক্ত দিবস


আজ ২১ ডিসেম্বর। নাটোর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নাটোর হানাদারমুক্ত হয়।

নাটোর ছিল পাকিস্তানি হানাদারদের ২ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার। এখান থেকেই দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের যুদ্ধ পরিচালনা করতো পাকবাহিনী।

২১ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের আগ পর্যন্ত পুরো নাটোর ছিল পাকবাহিনীর দখলে।

নাটোরের উত্তরা গণভবন ছাড়াও নাটোর আনসার হেডকোয়ার্টার, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজ, নাটোর রাজবাড়ি, পিটিআই ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ছিল পাকি সেনাদের নিরাপদ ঘাঁটি।

মুক্তিযুদ্ধে নাটোরে বড় ধরনের কোনো লড়াই না হলেও একাধিক স্থানে চালানো হয় গণহত্যা।

তবে ৩০ মার্চ লালপুর উপজেলার দুর্গম ময়না গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিপাগল জনতার যে যুদ্ধ হয়, তা ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রথম যুদ্ধ। ওই যুদ্ধে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস পাক-হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদররা নাটোর সদর উপজেলার ফুলবাগান, ছাতনী, দত্তপাড়া, মোহনপুর, লালবাজার, কাপুড়িয়াপট্টি, শুকলপট্টি, মলি­কহাটি, বড়াইগ্রামের বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন, গুরুদাসপুরের নাড়িবাড়ি, সিংড়ার হাতিয়ানদহ, কলম ও লালপুর উপজেলার গোপালপুরের নর্থবেঙ্গল সুগার মিল চত্বরে গণহত্যা চালায়। এ সব গণহত্যা ছিল ইতিহাসে নৃশংস ও হৃদয়বিদারক ঘটনা।

একাত্তরে ১৬ ডিসেম্বর থেকেই নাটোর পিটিআই স্কুল, আনসার হল, রিক্রিয়েশন ক্লাব, এন এস কলেজ, নাটোর রাজবাড়ি, দীঘাপতিয়া রাজবাড়ি চত্বরের ক্যাম্পসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া পাকসেনারা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করলেও নাটোরের দীঘাপতিয়া রাজবাড়ি চত্বরে চূড়ান্ত আত্মসমর্পণের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় এই দিনে। ফলে এদিনই নাটোর মুক্ত দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।

পাকবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফ মিত্রবাহিনীর ১৬৫ মাউনটেন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র সমর্পণ করেন।

এদিন পাকিস্তানী বাহিনীর ১৫১ অফিসার, ১৯৮ জন জেসিও, ৫ হাজার ৫০০ সেনা, ১ হাজার ৮৫৬ জন আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য ও ৯টি ট্যাংক, ২৫টি কামান ও ১০ হাজার ৭৭৩টি ছোট অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেন।

একাত্তরের এ দিনে আত্মসমর্পণের খবর পেয়ে ওইদিন বিকেলে জয় বাংলা ধ্বনি দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন নাটোরের সর্বস্তরের মানুষ।

কেআর/ ওয়াই এ/এডিবি