ন্যাভিগেশন মেনু

নারীর দেহে অবাঞ্ছিত লোম প্রতিকারের উপায়


নারীর শরীরে অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা হতে পারে। অনিয়মিত মাসিক, স্থূলতা আর শরীরের বিভিন্ন স্থানে অবাঞ্ছিত লোম বেড়ে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে অনেকই চিকিৎসকের কাছে আসেন।

নারীর ঠোঁটের ওপর, চিবুক, বুক, পেট বা পিঠে তুলনামূলক মোটা, কালো কখনও বা একটু ঘন লোম দেখা দেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়– এই অবাঞ্ছিত লোম বৃদ্ধিকে ‘হারসুটিজম’ বলা হয়।

যেভাবে অবাঞ্ছিত লোম তৈরি হয়-

মেয়েদের শরীরে স্বাভাবিকভাবে এন্ড্রোজেন বা পুরুষ হরমোনের পরিমাণ খুব অল্প। কিন্তু কখনও ডিম্বাশয় বা এডরেনাল গ্রন্থি থেকে এই এন্ড্রোজেন বেশি পরিমাণে তৈরি হলে বা এন্ড্রোজেনের অধিক কার্যকারিতার কারণে এই ‘হারসুটিজম’ দেখা দিতে পারে।

পলিসিস্টিক ওভারি রোগীদের মেটাবলিক ও হরমোনজনিত আরও কিছু সমস্যা হতে পারে। স্থূলতা বা ওজন বেশি থাকা, কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকা। ইনসুলিন হরমোন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না, তাই ইনসুলিনের আধিক্য থাকা সত্ত্বেও রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।

 এ ছাড়া থাইরয়েড ও প্রোলেকটিন হরমোনের তারতম্য ও রক্তে ভিটামিন ডি ও ইনোসিটোল নামের উপাদান কমে যায়।

অনেক সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরও অবাঞ্ছিত লোম হওয়ার কারণ পাওয়া যায় না। অনেক সময় দেখা যায়, এ সমস্যা বংশগত হয়ে থাকে। আবার স্থূল মেয়েদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়।

 অবাঞ্ছিত লোম সমস্যার সঙ্গে আরও অনেক সমস্যা জড়িয়ে থাকতে পারে। তাই কেবল লোমের সুরাহা করতে ব্যস্ত না থেকে একজন হরমোন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। থাইরয়েড ও অ্যান্ড্রোজেন হরমোন, রক্তে চিনি, চর্বি, রক্তচাপ, ওভারি বা অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির আলট্রাসনোগ্রাম ইত্যাদি পরীক্ষার দরকার হতে পারে।

রোগ নির্ণয়ের পর উপসর্গ অনুযায়ী পুষ্টিবিদ, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, ত্বক বিশেষঞ্জের পরামর্শ নিতে হতে পারে।

এছাড়া  নিয়মিত হাঁটা, ওজন কমানো, উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার পরিহার ও টেনশনমুক্ত জীবনযাপন করতে হবে।

যার এন্ড্রোজেন হরমোন বেশি আছে, তাদের সিপ্রোটেরন এসিটেট ও স্পাইরোনোলেকটন জাতীয় ওষুধ ভালো কাজ করবে।

মেটফরমিন জাতীয় ওষুধ ইনসুলিনকে কাজ করতে সাহায্য করে ও ওজন কমায়।

থাইরয়েড বা প্রোলেকটিন হরমোনের ওষুধ খেতে হতে পারে প্রয়োজনবোধে।

ভিটামিন ডি ও ইনোসিটোলের ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে হবে।

 সুষম খাবার, ব্যায়াম, সঠিক ওজন অর্জন করা এবং ধরে রাখা চিকিৎসার মূল ভিত্তি।

ভিটামিন ডি ব্যবহারেও সুফল পাওয়া যায়।

লোম কমানোর জন্য অন্যান্য চিকিৎসা, যেমন লেজার থেরাপি, মলম ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।

ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, চর্বির অস্বাভাবিকতা থাকলে তার চিকিৎসা করতে হবে। সময়মতো বন্ধ্যত্ব চিকিৎসা করা হলে সে ক্ষেত্রেও সুফল পাওয়া যায়।

এস এস