ন্যাভিগেশন মেনু

ন্যামভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সম্পদের অবাধ প্রবাহের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর


পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদারে সহায়তার লক্ষ্যে সম্পদের প্রবাহের ওপর উপর নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার (১১ অক্টোবর) বেলগ্রেডে ন্যাম এর ৬০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন।

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ন্যাম সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ন্যামের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মূলধন, প্রযুক্তি ও শ্রমের অবাধ চলাচলের সুযোগ থাকা উচিৎ।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সংস্থার সদস্যদের উচিত দারিদ্র হ্রাসের লক্ষ্যে সম্পদের প্রবাহের ওপর কম বিধিনিষেধ আরোপ করা এবং এসডিজি’র প্রধান লক্ষ্যসমূহ অর্জনের জন্য আয়ের আরো সুষম বন্টন নিশ্চিত করা।

তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর দীর্ঘদিনের উৎপীড়নের কথা তুলে ধরে এই ইস্যুতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে বৈষম্যের কারণে হতাশা ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হওয়া সত্ত্বেও, ভ্যাকসিনের জাতীয়বাদ ও রাজনীতিকরণ করার কারণে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ঠেকাতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’

ড. মোমেন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে একটি বৈশ্বিক গণ-পণ্য হিসেবে বিবেচনা করে অবিলম্বে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য হ্রাসের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

ন্যামের প্রাসঙ্গিতকার ওপর জোর দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন, সন্ত্রাসবাদ, সহিংসতার মতো চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে মোমেন সামষ্টিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ন্যাম সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে এখনও মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণ হচ্ছে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহামারি পরবর্তী টেকসই উত্তরণে সবাইকে একসাথে কাজ করার জন্য ন্যামভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি ফোরাম অব মিনিস্টার্স অব ফরেন, ফাইন্যান্স ও ডেভেলপমেন্ট অব দ্য গ্লোবাল সাউথ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিমুখী সহযোগিতার জোরদারের প্রস্তাব দেন।

তিনি আরো বলেন, ‘এ ফোরাম টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সম্ভাবনা খুঁজে বের করবে এবং পরস্পরের সাথে অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, প্রযুক্তি ও সম্পদ বিনিময় করবে।’

সাম্য, মানবতা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরে ড. মোমেন ন্যামের মৌলিক আদর্শের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের শান্তি-কেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সাথে অত্যন্ত সঙ্গতিপূর্ণ।’ 

২০২১ সালের ১১-১২ অক্টোবর থেকে বেলগ্রেডে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের ৬০ তম সম্মেলনে বাংলাদেশী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ঘানার প্রেসিডেন্ট, আলজেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, কুয়েত সৌদি আরব, ভারত, ইরাক, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, জিম্বাবুয়ে, উগান্ডা, গ্যাবন, গাম্বিয়া, সুদান, হাইতি, এঙ্গোলা ও ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন ন্যামভুক্ত রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও অন্যান্য মন্ত্রীরা এবং ৭০টির বেশি দেশের উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ গ্রহণ করছেন।

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ও সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট যৌথভাবে সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব ও ইউএনজিএ’র ৭৬তম অধিবেশনের সভাপতিও সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন।