ন্যাভিগেশন মেনু

পোশাকশ্রমিকের খণ্ডিত মরদেহ: স্ত্রী ও মসজিদের ইমাম ৫ দিনের রিমান্ডে


রাজধানীর দক্ষিণখানে মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে পোশাকশ্রমিক আজহারের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার স্ত্রী আসমা আক্তার ও মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমানের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (২৬ মে) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের ১০ দিন করে রিমান্ডে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম নিভানা খায়ের জেসী তাদের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২৫ মে) দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমানকে এবং সন্ধ্যায় রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর এলাকা থেকে আজহারের স্ত্রী আসমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ইমাম আব্দুর রহমানের সঙ্গে আসমার অনৈতিক সম্পর্ক চলমান ছিল। বিষয়টি তার স্বামী আজহার টের পাওয়ায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারা দুজন (আসমা ও ইমাম আব্দুর রহমান)। আসমা ইমামকে বলেন, তার স্বামীকে মসজিদে ডেকে নিয়ে শেষ করে (হত্যা করা) দিতে হবে। এরপরই আজহারকে কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ গুম করা হয়।

মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তিনি হত্যার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

র‍্যাব জানায়, গত ১৯ মে হত্যাকান্ডের দিন এশার নামাজের পর নিহত আজহারের সঙ্গে ইমাম আব্দুর রহমানের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে ইমাম ধারালো অস্ত্র দিয়ে আজহারের ঘাড়ে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। পরে মসজিদের ইমামের রুমেই ফজরের আযানের আগ পর্যন্ত আজহারকে কুপিয়ে ছয় টুকরা করেন ইমাম নিজেই। এরপর মসজিদের নিচতলার ওজুখানার পানির সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ লুকিয়ে রাখেন তিনি। আজহারকে হত্যার পর ইমাম আব্দুর রহমান মসজিদে নিজের রুমেই অবস্থান করছিলেন। ইমাম পুরো হত্যাকাণ্ডটি ঘটান মসজিদে তার শয়নকক্ষে। তিনি নিয়মিত ওয়াক্তের নামাজে ইমামতিও করেন।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব। এ সময় তারা জানায়, সোমবার (২৪ মে) মসজিদের সিঁড়িতে রক্তের দাগ ও সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। এছাড়া আজহার ১৯ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিল। এমন ঘটনায় অনুসন্ধান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে র‍্যাব ইমামকে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা জানতে পারে। এ সময় অভিযুক্তের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ৩টি চাকু ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনা তদন্তের একপর্যায়ে দক্ষিণখানে মাদরাসাতুর রহমান আল আরাবিয়া থেকে আব্দুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সরদারবাড়ি জামে মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে আজহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওয়াই এ/এডিবি/