ন্যাভিগেশন মেনু

ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রে আঘাতে রাবির শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়: চিকিৎসক


সাভারে নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের বুকে ছুরিকাঘাতে তার ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রে আঘাতে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন নিহতের লাশের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

সোমবার ( ২৬ অক্টোবর ) রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডাঃ শেখ ফুয়াদ আলামীন এ কথা জানিয়েছেন।

ডাঃ শেখ ফুয়াদ আলামীন দৈনিক বাংলাদেশ পোস্ট’কে বলেন, ”ময়নাতদন্তের সময় মোস্তাফিজের শরীরে দুটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি ছিলো গুরুতর। আঘাতটি তার বুকের বাম পাশে করা হয় এবং সেটি সাড়ে ৪ ইঞ্চি গভীরে গিয়ে তার ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের বাম অলিন্দে আঘাত করে। মূলত এই আঘাতটিই তার মৃত্যুর কারন।” 

এদিকে ছিনতাকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়ার দু’দিন পর এঘটনায় নিহত মোস্তাফিজুর রহমানের বাবা মজিবুর রহমান বাদি হয়ে সোমবার (২৬ অক্টোবর) সকালে অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যদিও এঘটনায় জড়িত কাউকেই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

এবিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ  দৈনিক বাংলাদেশ পোস্ট’কে বলেন, ”মোস্তাফিজ হত্যার ঘটনায় তার বাবা বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে”।

এর আগে গত শনিবার (২৪ অক্টোবর) ভোরে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের শিমুলতলা এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে মর্মান্তিকভাবে নিহত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি গত এক বছর যাবত সাভারের কমলাপুর এলাকার গেণ্ডারিয়া স্কুল এন্ড কলেজ নামক বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাম হিসাব রক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন।

তার সহকর্মীরা জানান, ২১ অক্টোবর ছুটি নিয়ে স্ত্রী ও ১ বছর বয়সী শিশু সন্তানদের আনতে গ্রামের বাড়িতে যান মোস্তাফিজ। কিন্তু সন্তান অসুস্থ্য থাকায় একাই ঢাকায় ফিরেন মোস্তাফিজ। শনিবার তার কর্মস্থলে যোগদানের কথা ছিলো, কিন্তু গাড়ি থেকে নেমেই ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে প্রাণ হারান তিনি।

অন্যদিকে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই সাভারের শিমুলতলা, সিআরপি রোড, ডগরমোড়া এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্র সক্রিয় থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছে। ভোর ও সন্ধ্যার পর তাদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এলাকায় অপরিচিত কিংবা নতুন মুখ দেখলে তাদের টার্গেট করে সুযোগ বুঝে তাদের সর্বস্ব হাতিয়ে নিতো চক্রটি। এছাড়াও ওই এলাকার মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপের নেপথ্যেও চক্রটি জড়িত বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সাভারের লালটেক মহল্লার জয়নাল চৌকিদারের ছেলে আলী, চাপাইনের জনৈক নাছিরৈর ছেলে সুজন ওরফে বিহারী সুজন, শফীকসহ বেশ কয়েকজন চক্রটির মূল হোতা। এছাড়াও এই চক্রে রয়েছে সুলতান, রাজিব, রনি, নয়ন, দেলোয়ার ওরফে দেলুসহ আরও বেশ কয়েকজন সক্রিয় ছিনতাইকারী। মূলত এদের নেতৃত্বেই পরিচালিত হয় ওই এলাকার সকল ছিনতাইয়ের ঘটনা। এদের মধ্যে আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ অন্তত ২০-২৫টি মামলা রয়েছে বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে।

জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, ”বিষয়টি এখনো তদন্তনাধীন। আমরা সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা এই হত্যাকান্ড সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি, আশা করছি খুব শিঘ্রই আমরা ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারবো। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে এই মুহুর্তে কোন তথ্য দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”

এস এ/ওআ