ন্যাভিগেশন মেনু

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারলেও তার আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি: রাষ্ট্রপতি


আজ জাতীয় শোক দিবস। এই দিন ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারলেও তার আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি । বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আজ অভিন্ন সত্ত্বায় পরিণত হয়েছে, শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট মো. আবদুল হামিদ।

সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, আসুন, জাতীয় শোক দিবসে আমরা জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করি এবং তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আত্মনিয়োগ করি।

তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠাই ছিল তার স্বপ্ন। তাই আমাদের দায়িত্ব হবে জ্ঞানগরিমায় সমৃদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। তাহলেই আমরা চিরঞ্জীব এ মহান নেতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে পারব।

যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো-কোটি বাঙালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে বলেন রাষ্ট্রপতি।

মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার তাগিদ দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, এ বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে। ২০২১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হবে। এ দু’টি জাতীয় অনুষ্ঠান বাঙালি জাতির ইতিহাসে অনন্য মাইলফলক। আমি মনে করি, এ দু’টি অনুষ্ঠান যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদার সঙ্গে উদযাপনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে নিজেদের নিয়োজিত করতে পারবে।

বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১৫ আগস্ট এক কলঙ্কজনক অধ্যায় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭৫ সালের এদিনে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ঘাতকচক্রের হাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শাহাদাত বরণ করেন।

একই সঙ্গে শহিদ হন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ অনেক নিকট আত্মীয়। এমন ঘটনা কেবল দেশের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও বিরল। আমি শোকাহত চিত্তে তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে সব শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি বলেন রাষ্ট্রপতি।

বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা মহান স্বাধীনতার রূপকার। ১৯৪৮ সালে ভাষার দাবিতে গঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বসহ ১৯৫২ এর মহান ভাষা আন্দোলন ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ’৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬২ শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬ এর ৬-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ’৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাকে বারবার কারা বরণ করতে হয়।

বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্য-আয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প-২০২১’, ‘রূপকল্প-২০৪১’ ও ‘ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০’ ঘোষণা করেছেন। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাই। আসুন, জাতীয় শোক দিবসে আমরা জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করি এবং তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আত্মনিয়োগ করি বলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ।

সিবি/এডিবি