ন্যাভিগেশন মেনু

বাবা দিবস: কোনো বাবা-মাকে আর যেন বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয়


আজ ২১ জুন, বিশ্ব বাবা দিবস।অনেকেই বলছেন - বাবার আবার কোন দিবস হয় নাকি? বাবা তো বাবা-ই। তিনশ পয়ষট্টি দিনই বাবা দিবস। বাবা মানেই তো নির্ভরতা, নির্ভরতার সর্বোত্তম আশ্রয়স্থল। বাবা মানেই বটবৃক্ষ। উত্তপ্ত পৃথিবীতে সন্তানের শীতল ছায়া।

সন্তানের প্রতি বাবার ভালবাসার প্রকাশ প্রতিক্ষণই ঘটে। তারপরও বাবার জন্য বিশেষ দিন হিসেবে প্রতি বছর ‘বিশ্ব বাবা দিবস’ পালিত হয়ে আসছে। সব ধর্মেই বাবার স্থান উপরের আসনে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি পিতার সন্তুষ্টিতে এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টি পিতার অসন্তুষ্টিতে নিহিত।’ (তিরমিযি-১৮৯৯)।

‘পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম, পিতাহী পরমং তপঃ, পিতরী প্রিতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্বদেবতা’ এর অর্থ হচ্ছে- পিতা স্বর্গ, পিতাই ধর্ম, পিতাই পরম তপস্যা। পিতাকে খুশি করলে সকল দেবতা খুশি হন।

আসলে মা'র পাশাপাশি বাবাও যে সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল- এটা বোঝানোর জন্যই এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই এই বাবা দিবসের শুরু।

এই নিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয় - মা দিবস কয়েকশো বছর ধরে পালন করা হচ্ছে, কিন্তু সেই তুলনায় বাবা দিবসটি অনেক নতুন। দিবসটি সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম চালু হয়েছে এবং এর শুরু নিয়ে বেশ কয়েকটি গল্প আছে।

সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সম্ভবত গ্রহণযোগ্য গল্পটি হলো, ওয়াশিংটনের সো নোরা লুইস স্মার্ট নামের একজন নারী এই দিন উদযাপন শুরু করেন। ষষ্ঠ সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে তার মা মারা গেলে তার বাবা পরিবারটিকে বড় করে তোলেন।

১৯০৯ সালে সোনোরা গির্জার একটি বক্তব্যে মা দিবসের কথা জানতে পারেন। তখন তার মনে হলো, বাবার জন্যেও এরকম একটি দিবস থাকা উচিত। স্থানীয় বেশ কয়েকজন ধর্মযাজক তার এই আইডিয়াটি গ্রহণ করেন। 

ধারণা করা হয়, ১৯১০ সালের ১৯ জুন প্রথমবারের মতো বাবা দিবসটি পালন করা হয়, যদিও তা আনুষ্ঠানিক ছিল না। পরে ১৯৬৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন সিদ্ধান্ত নেন যে, প্রতি বছর জুনের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস হিসাবে পালন করা হবে। এর ছয় বছর পর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এটিকে আইনে পরিণত করেন।

প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার পৃথিবীজুড়ে বাবা দিবস পালিত হয়। বাবার প্রতি ভালোবাসা জানানোর জন্য একটি দিনকেই বেছে নেওয়া উচিত কি উচিত না, সে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হতে পারে, তবে আমাদের বোঝার চেষ্টা করা উচিত এই দিবসটি আসলে আমাদের কিসের বার্তা দেয়।

বর্তমান সময়ে প্রতিবছর বাবা দিবস, বা মা দিবস আসলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে বাবা-মার সঙ্গে ছবি আপলোড দেওয়ার ব্যাপকতা বেড়ে যায়। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের নিয়মিত কিছু কাজের মধ্যে এটি অন্যতম।

তবে এই ছবি আপলোড করাটা যেন লোকদেখানো না হয়। সবার প্রত্যাশা হোক কোনো বাবা-মাকে আর যেন বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয়।

এডিবি/