ন্যাভিগেশন মেনু

বৈদেশিক বরাত বাতিলের শঙ্কায় সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হলো গার্মেন্টস-পাটকল


বৈশ্বিক  নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সম্ভাব্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা আয়ত্বে নিয়ে আসা ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে দেশের যেসব কারখানায় বৈদেশিক ক্রেতাদের তৈরি পোশাকের অর্ডার আছে সেসব কারখানা সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কয়েকটি ধাপে সেগুলো চালু হচ্ছে।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প। এ শিল্পের সঙ্গে ৬০ লাখের বেশি শ্রমিক কর্মরত। যার সিংহভাগ শ্রমিকই মহিলা। প্রথম ধাপে ঢাকার মধ্যে কয়েকটি কারখানা রবিবার (২৬ এপ্রিল) থেকে চালু হয়ে গেল। 

এ কারখানাগুলো ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিক দিয়েই চালানো যাবে।এরপর একে একে চালু করা হবে ঢাকার অদূরে আশুলিয়া, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এবং এর আশপাশের কারখানা। 

আর সব শেড চালু হবে টঙ্গি ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের কারখানাগুলোয়। তবে হঠাৎ ঘোষণা দিয়ে, শ্রমিক ডেকে কারখানা চালু করা সিদ্ধান্ত আত্মঘাতির শামিল বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

শ্রমিকদের কারখানায় কাজ করানোর আগে কোয়ারেন্টিনে রাখার পরামর্শও দেন তারা।অন্যদিকে এই মুহুর্তে কারখানা চালুর পক্ষে নয় শ্রমিক নেতারা। তাদের দাবি পরিস্থিতি স্বাভাবিক আর পরিবহন ব্যবস্থা চালু হলে কারখানা খোলা যেতে পারে। 

তবে সেটি করতে হবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন- বিজেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, যেসব কারখানায় বিদেশের অর্ডার আছে সেসব কারখানা কয়েকটি ধাপে চালু করা হবে।

প্রথমধাপে আগামীকাল রবিবার ঢাকার আটটি কারখানা খোলা হবে, এসব কারখানার  শ্রমিকরা ঢাকায় আছেন বলে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেননা স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের দিয়ে এসব কারখানা চালানো যাবে। 

এছাড়া মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) খোলা হবে আশুলিয়া থেকে মানিকগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত কারখানাসমূহ। আর আগামী রবিবার (৩০ এপ্রিল) থেকে চালু হবে নারায়ণগঞ্জসহ কাচপুর, রূপগঞ্জ এলাকার কারখানা। 

এছাড়া আগামী ২, ৩, ৪ মে টঙ্গী এবং ময়মনসিংহ এলাকার কারখানা চালু হবে।জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনেরর সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কারখানা চালুর পক্ষে আমি না। 

এখনও পরিবেশ ভালো হয়নি।  এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, আরএমজিসহ অর্থনৈতিক সব কিছু খোলা যেতে পারে, তবে সেটা নিয়মের মধ্যে। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইএবি) সভাপতি এবং বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে লকডাউনের মতো অবস্থা বিরাজ করছে। 

আমাদের অনেক অর্ডার বাতিল হয়েছে। এখন আমরা কয়েকটি ধাপে কারখানা চালু করবো। তিনি বলেন, কোনো শ্রমিক এই মুহুর্তে গ্রামে অবস্থান করলে সে সেখানে থাকবে। তার বেতন বিকাশের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন পরে এসে তিনি আবার জয়েন করবেন, চাকরি চলে যাবে না। আমরা কারখানা চালু করবো যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে। 

এদিকে এক মাস পর খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকল রবিবার থেকে আবার চালু হলো। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে পাটকলগুলোতে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ছিল। 

শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিল চালানো হবে বলে মিলের কর্মকর্তারা জানান।খাদ্য ও কৃষি বিভাগে চটের বস্তার সংকট নিরসনে সীমিত পরিসরে পাটকল চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

রবিবার ভোর ৫ টা থেকে পাটকলগুলো চালু হয়ে চলবে দুপুর ২ টা পর্যন্ত। মাঝে এক ঘণ্টার বিরতি থাকবে। মিল কলোনিতে বসবাসকারী শ্রমিকরাই এই কাজে যোগ দিতে পারবেন।

এস এস