ন্যাভিগেশন মেনু

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ-রহনপুর মুক্ত দিবস ১১ ডিসেম্বর


আজ ১১ ডিসেম্বর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর মুক্ত দিবস।  ১৯৭১ সালের এইদিনে রহনপুর সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়েছিলো। বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়ে এদিন বিজয় উল্লাস করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাসহ রহনপুরের  মানুষ।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ৭নং সেক্টরের সহ-অধিনায়ক বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের নির্দেশে ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর খুব সকালে লেফটেন্যান্ট রফিকের নেতৃত্বে প্রায় ৩০/৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল বাঙ্গাবাড়ি থেকে রহনপুর অভিমুখে রওনা হয়। পথে আলিনগর এলাকার মুক্তিযোদ্ধারাও তাদের সাথে যোগ দেয়।

এছাড়া মহানন্দা নদী পেরিয়ে বোয়ালিয়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা রহনপুরে প্রবেশ করে। মুক্তিযোদ্ধারা রহনপুরে প্রবেশের আগেই পাক সেনারা রহনপুর এ বি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপন করা ক্যাম্প গুটিয়ে ট্রেনযোগে পালিয়ে যায়। পরে মুক্তিযোদ্ধারা নাচোল-আমনুরা হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দিকে এলাকাগুলো মুক্ত করতে রওনা হয়।

অন্যদিকে, একই দিনে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপন যুদ্ধ করে পাক সেনাদের বিতারিত করে।

শিবগঞ্জ উপজেলার সাহাবাজপুর ইউপির আবুল খায়ের বিশ্বাসের বাড়ী থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ছয় নভেম্বর পাক সেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে পরাস্থ করে কানসাট অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে। এদিকে ৩০ নভেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর বালিয়াদিঘী-সোনামসজিদ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে ধোবড়া এলাকায় পাক সেনা অবস্থানে আক্রমন চালান। ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে ধোবড়া এলাকায় মুক্তি বাহিনী পাকসেনাদের পরাস্ত করে সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা ডিফেন্স বসায়। ওই সময় ২০/২৫জন পাকসেনা মারা যায়। 

৮ ডিসেম্বর বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পাক বাহিনী বিনোদপুর ও মনাকষা এলাকার শতাধিক নিরীহ গ্রামবাসীকে ঘরে আটকে আগুনে পুড়িয়ে  এবং ৫০/৫৫ জনকে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে।

এ খবর পেয়ে সাবেক এম.পি শাহজাহান আলী ও আমানুল্লাহ বিশ্বাসের বাহিনী এবং মনাকষা এলাকায় মইনউদ্দিন আহম্মেদ মন্টু ডাক্তারের মুক্তিবাহিনী ত্রিমুখী আক্রমণ করে সম্মুখযুদ্ধে লিপ্ত হয়। ৬/৭ জন পাক সেনাকে নিহত করার পর শিবগঞ্জ অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে। একই ভাবে চককীর্তি ধাইনগরসহ আরও বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্তরে এসে মিলিত হয়ে পাক বাহিনীকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের দিকে তাড়িয়ে দেয়।

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর পৌঁছার পর বর্তমান উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শিবগঞ্জকে মুক্ত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করা হয়।

এসএ/এডিবি