ন্যাভিগেশন মেনু

খুলনাকে হারিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করল ঢাকা


জেমকন খুলনার সাথে দ্বিতীয় দেখায় ব্যাট ও বল দুই বিভাগেই দাপট দেখিয়েছে বেক্সিমকো ঢাকা। ব্যাট হাতে সাব্বির-নাঈম-আকবরদের পরে বল হাতেও দলের ভরসার প্রমাণ দেন রবি-মুক্তাররা। দলগত এই নৈপূণ্যে ২০ রানের জয় পেয়েছে মুশফিকুর রহিমের দল। রবিউল ইসলাম রবি পেয়েছেন ৫টি উইকেট।

বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে জেমকন খুলনাকে ২০ রানে হারিয়ে শেষ চারের খেলা নিশ্চিত করল বেক্সিমকো ঢাকা। আগে ব্যাট করতে নেমে ঢাকা করে সাত উইকেটে ১৭৯ রান। জবাবে তিন বল বাকি থাকতে ১৫৯ রানে অল আউট খুলনা।

খুলনা হেরে গেলেও শেষ চারের খেলা নিশ্চিত হয়েছে তাদেরও। ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে চট্টগ্রাম (বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার ম্যাচের আগের হিসাব)। আট ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে খুলনা। সাত ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ঢাকা। এই তিন দলেরই শেষ চারে খেলা নিশ্চিত। বাকি একটি দল কোনটি, রাজশাহী না বরিশাল? সেটা পরিষ্কার হবে আরো কয়েকটি ম্যাচের পর।

বরিশাল নিজেদের বাকি দুই ম্যাচ জিততে পারলে শেষ চারে যাবে তারাই, তখন শেষ ম্যাচে রাজশাহী জিতলেও বাদ পড়ে যাবে উত্তরবঙ্গের দলটি। সাত ম্যাচে রাজশাহীর পয়েন্ট চার। শনিবার শেষ ম্যাচে রাজশাহী লড়বে চট্টগ্রামের। বরিশালের দুটি ম্যাচ বাকি, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপক্ষ চট্টগ্রাম, শনিবার তাদের প্রতিপক্ষ ঢাকা। ৬ ম্যাচে বরিশালের পয়েন্ট চার।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকেছে জেমকন খুলনা। লড়াই করার মতো ইনিংস শুধুমাত্র ওপেনার জহুরুল ইসলামের। মিডল অর্ডারে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও লোয়ার অর্ডারে শামীম হোসেন ছোট্ট ঝড় তুললেও জয়ের জন্য তা পর্যাপ্ত ছিল না।

৩৬ বলে ৫৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন খুলনার ওপেনার জহুরুল। তার ইনিংসে ছিল চারটি চার ও দুটি ছক্কা। ২৬ বলে ২৩ রানের টেস্ট মেজাজের ব্যাটিং করেন মাহমুদউল্লাহ। তবে ৯ বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ২৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন শামীম হোসেন।

বরাবরের মতো এই ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাকিব আল হাসান। সাত বলে তার রান ৮। একটি মাত্র চার হাঁকিয়েছেন তিনি। আগের ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও এক রানে সম্বল মাশরাফি বিন মুর্তজার। ৪ বল খেলে ১ রান করেছেন হার্ড হিটার ওপেনার জাকির হোসেন। আরিফুল হক (৭) ও শুভাগত হোম (৫) মাঝের দিকে নিজের নামের সুবিচার করতে পারেননি। শেষের দিকে ৯ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন বোলার হাসান মাহমুদ।

বল হাতে ঢাকার হয়ে চমক দেখান পেসার রবিউল ইসলম রবি। ৩.৩ ওভারে ২৭ রানের বিনিময়ে তিনি তুলে নেন পাঁচটি উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই। রুবেল হোসেন ও মুক্তার আলী দুটি করে, নাসুম আহমেদ একটি উইকেট লাভ করেন।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু ছিল বেক্সিমকো ঢাকার। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানই পেয়েছেন রানের দেখা। নাঈম-সাব্বির উদ্বোধনী জুটিতে যোগ করেন ৪১ রান। ১৭ বলে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে বিদায় নেন নাঈম। কোন চার হাঁকাননি। কিন্তু উড়িয়ে মাঠের বাইরে বল পাঠিয়েছেন পাঁচবার। এরপর আল আমিনের সাথে সাব্বিরের জুটি বেশ জমে উঠে। আগের ম্যাচগুলোতে রান খরায় থাকলেও এদিন সাব্বির রহমান রুম্মন ছিলেন বেশ ছন্দে।

টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো ফিফটির দেখা পান এই হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান। ৩৮ বলে ৫৬ রান করে সাব্বির শহিদুল ইসলামের বলে মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দী। পাঁচ চারের সাথে তিনি ছক্কা হাঁকান তিনটি। সাব্বির আউট হন দলীয় ১৬৬ রানের মাথায়। তার আগে সাজঘরে ফেরেন আল আমিন ২৫ বলে ৩৬ রান করে। চারটি চারের সাথে তিনি ছক্কা হাঁকান একটি।

এই ম্যাচে ভালো করতে পারেননি অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম (৩) ও ইয়াসির আলী (০)। মুশি বিদায় নেন মাশরাফির বলে। আর ইয়াসির আলী হন রান আউট। শেষের দিকে আকবর আলীর ছোট্ট কার্যকরী ঝড় ঢাকাকে পৌঁছে দেয় চ্যালেঞ্জিং স্কোরে। ১৪ বলে ৩১ রান করেন আকবর। তার ইনিংসে ছিল একটি চার ও চারটি ছক্কার মার। মুক্তার আলী শেসের দিকে খেলেছেন টেস্ট মেজাজে, ১২ বলে ৬ রান। বিশ ওভারে ঢাকার সংগ্রহ দাঁড়ায় সাত উইকেটে ১৭৯ রান।

বল হাতে খুলনার হয়ে দুটি উইকেট নেন শহিদুল ইসলাম। সেখানে ৪ ওভারে ২৬ রানে এক উইকেট নেন মাশরাফি। তিন ওভারে ৩৬ রান দিলেও উইকেটের দেখা পাননি সাকিব আল হাসান। নাজমুল ও হাসান নেন একটি করে উইকেট।

ওআ/