ন্যাভিগেশন মেনু

মধ্যপ্রদেশের ছায়া মেহেরপুরে, বিয়ে করতে কনে গেলেন বরের বাড়িতে


যেকোন বিয়ের অনুষ্ঠানে বর তার সঙ্গী অর্থাৎ বরযাত্রীদের নিয়ে কনের বাড়িতে আগে যান  এটাই প্রচলিত নিয়ম। কিন্তু সম্প্রতি এই নিয়ম ভেঙে দিয়ে প্রথম আলোচনায় এসেছেন ভারতের একজন তরুণী।

এ ঘটনা ভারতের মধ্যপ্রদেশের সাতনার। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, ঢোলের তালে তালে গাড়ির বনেটে বসে নেচে বরের বাড়িতে গিয়ে বিয়ে করলেন ওই তরুণী।

ঘটনাটি গত ১৯ এপ্রিলের। পাত্রীর নাম গরিমা গুপ্ত। গরিমা বাড়ির ছোট মেয়ে। আত্মীয়স্বজন নিয়ে বিয়ে করতে যাওয়ার সেই দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করতেই শুরু হয় হইচই। অল্প সময়ের মধ্যেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়।

 ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, ফুল দিয়ে সজ্জিত একটি জিপ। সেই জিপের পিছনে বসে আছেন কনের বান্ধবী ও বোনেরা। আর কনে বসে আছেন জিপের বনেটে। সানগ্লাস চোখে জিপের বনেটে বসেই সামনে বাজা ঢোলের তালে কোমর দোলাচ্ছেন গরিমা।

জিপের নীচে নাচছেন কনের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবরা। এ ভাবেই গ্র্যান্ড এন্ট্রি নিয়ে বিয়ে করতে যাচ্ছেন গরিমা। এবার মধ্যপ্রদেশের ছায়া মিলল বাংলাদেশেও। প্রচলিত নিয়ম ভেঙে বিয়ে করতে যাত্রী নিয়ে বরের বাড়িতে হাজির হলেন কনে!

শনিবার এমন ঘটনা ঘটেছে দেশের পশ্চিমের জেলা মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার চৌগাছা গ্রামে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মুখরোচক গল্প শোনা গেলেও কেউ কেউ এ ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

আরো পড়ুনঃ

জাস্টিন বিবারের বিয়ে

বিয়ের মওসুমে সুখবর- কমলো সোনার দাম

কনে চুয়াডাঙ্গার হাজরাহাটি গ্রামের কামরুজ্জামানের মেয়ে খাদিজা আক্তার খুশি। সে কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর গাংনী উপজেলার চৌগাছার কমরেড আব্দুল মাবুদের ছেলে তরিকুল ইসলাম জয় একজন ব্যবসায়ী।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার দুপুরে ৭টি মাইক্রোবাস ও ৩০টি মোটরসাইকেল বহর নিয়ে কনে এসে নামেন বরের বাড়ির গেটের সামনে। বিয়ের বহর গেটের কাছে আসতেই অন্যরকম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

বাড়ির গেটের সামনে মাইক্রোবাস থেকে নামলেন লাল বেনারসি শাড়ি পরা কনে। এ সময় কনেকে ফুল ও মিষ্টি মুখ করিয়ে বরণ করে নেন বরপক্ষ। এরপর শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। ইসলামি শরীয়াহ অনুযায়ী একজন মাওলানা তাদের দু’জনকে কবুল পড়ান।

প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিয়ের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করান স্থানীয় কাজী। এরপর বর পক্ষের দাওয়াতী আত্মীয় স্বজন ও কনে যাত্রীদের ভুড়িভোজ করানো হয়। বিকালে বর তরিকুল ইসলাম জয়কে নিয়ে কনে খাদিজা আক্তার খুশি চলে যান তার বাবার বাড়িতে।

সেখানে কয়েকদিন কাটানোর পর কনেকে সঙ্গে নিয়ে বর ফিরে আসবেন নিজের বাড়িতে। নিজের বিয়ের এমন আয়োজন সম্পর্কে কনে খাদিজা আক্তার খুশি বলেন, নারী-পুরুষের সমান অধিকার হিসেবে একজন মেয়ে একজন ছেলেকে বিয়ে করতে তার বাড়িতে যেতে পারেন, তা কখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

সেই বাধার বৃত্ত ভেঙে আমরা শুরু করেছি। আশা করছি আরও অনেকেই এখন এটি করবেন। বিয়ের আয়োজন প্রসঙ্গে বরের বাবা কমরেড আব্দুল মাবুদ গণমাধ্যমকে বলেন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের অনেক কিছুই করার আছে।

 মুখে আমরা বললেও তা বাস্তবায়ন করছি কতটুকু? তাই আমি এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে নারী-পুরুষের সমতার বিষয়টি সামনে আনতে চেয়েছি। দুপুরে ছয়টি প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসে স্বজনদের নিয়ে বরের বাড়ি পৌঁছান খাদিজা।

আরো পড়ুনঃ

নিকের অস্বস্তি দূর করলেন প্রিয়াঙ্কা

এরপর বিয়ে শেষে হয় খাওয়াদাওয়া। সন্ধ্যার দিকে বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন খাদিজা। বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর সদস্য আব্দুল মাবুদ ওই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন।তিনি বলেন, নারী পুরুষের যে বৈষম্য আমাদের সমাজে রয়েছে সেটা দূর হবে যদি এমনভাবে বিয়ে হয়।

তাছাড়া বিয়ে বাড়িতে এতদিন যে কনে পক্ষের একটা বিশাল খরচ হয়ে আসত সেটা দূর হবে। আগেকার বিয়ের রীতি ভেঙে এখানে যে ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে তাকে আমি সাধুবাদ জানাই।


এস এস