ন্যাভিগেশন মেনু

মির্জাগঞ্জে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে হনুমান


পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের কাঁঠালতলী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে খাদ্যের সন্ধানে হনুমান লোকালয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রথমবারের মতো গতকাল (১৪ সেপ্টেম্বর) কাঁঠালতলী সাপ্তাহিক বাজারে দুই থেকে তিনটি মুখপোড়া হনুমান দেখা গেছে। হনুমান দেখতে স্থানীয় উৎসুক জনতা ও শিশুরা ভিড় করছে। তবে হনুমানগুলো কারও কোনও ক্ষতি করছে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হনুমানগুলো খুবই শান্ত প্রকৃতির। পেটের ক্ষুধায় ভয়ভীতি ছেড়ে এগুলো লোকালয়ে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনেকেই হাত বাড়িয়ে কলা, বিস্কুট, পাউরুটি দিচ্ছেন। লোকজনের আনাগোনা বেশি হলে বিরক্ত হয়ে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছে হনুমানগুলো। এগুলো কোথা থেকে কীভাবে এসেছে তা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারছে না।

মাধবখালী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. কামরুল হুদা বলেন, কাঁঠালতলী বাজারে গত বছরও এই সময়ে হনুমান এসেছিলো। হনুমান শ্রী রামের ভক্ত। দলছুট হয়ে এ এলাকায় চলে এসেছে। সচারাচার হনুমান এ এলাকায় দেখা যায় না।

সুবিদখালী বাজারের টমটম চালক সমীর বলেন, 'কয়েকদিন ধরে হনুমানটি এই এলাকায় দেখা যাচ্ছে। আমি প্রথমবার সরাসরি হনুমান দেখলাম। হনুমানকে যে যা দিচ্ছে তাই খাচ্ছে, উৎসুক লোকজন ও শিশুরা তাকে বিরক্ত করছে।'

স্থানীয়রা ধারণা করছেন, এভাবে অরক্ষিত অবস্থায় ঠিকমতো খেতে না পেয়ে হনুমানটি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। এছাড়া মানুষের উৎপাতে প্রাণিটির প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে।

কাঁঠালতলী হাই স্কুলের শিক্ষক মো. আবদুল গাফ্ফার বলেন, এ এলাকায় কখনও হনুমান দেখা যায় না। তবে কাঁঠালতলী বাজারসহ এর আশেপাশের এলাকায় গত দুই-তিন দিন ধরে দেখা যাচ্ছে এই হনুমান। স্কুলের উপরে টাওয়ারের ও স্কুলের ছাদে ঘোরাফেরা করে। লাফিয়ে লাফিলে এক ছাদ থেকে অন্য ছাদে যাচ্ছে, ছাত্র-ছাত্রীরা খাবার দিচ্ছে। তবে হনুমানগুলো কারো কোনও ক্ষতি করছে না।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সঞ্জিব কুমার বিশ্বাস বলেন, এরা প্রকৃতির বন্ধু। হনুমানকে বিরক্ত না করলে সে কারও কোনও ক্ষতি করবে না। খাবারের সন্ধানে হয়তো সুন্দরবন বা দক্ষিণাঞ্চলের কোনও এলাকা থেকে বা ট্রাকে চড়ে হনুমানটি এখানে এসেছে।

জেলা বন কর্মকর্তা মো. আবদুল আল মামুন বলেন, হনুমানের এ এলাকায় কোনও আবাসস্থল নেই। বিভিন্ন সময়ে এ হনুমানগুলো অবৈধভাবে পাচারকালে ছুটে গেছে। ফলে এ বাজারে হয় তো চলে এসেছে। আমরা বনবিভাগ থেকে চেষ্টা করবো যাতে হনুমানকে উদ্ধার করতে পারি। উদ্ধার করতে পারলে এটিকে বনের মধ্যে অবমুক্ত করা হবে।

এআরএস/সিবি/এডিবি/