ন্যাভিগেশন মেনু

মেজর সিনহা হত্যা মামলা: দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ


কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার তৃতীয় দফায় তৃতীয় দিনে দ্বাদশতম সাক্ষির সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

এর আগে গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত মামলার প্রথম দফার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদি ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা সঙ্গী সাহেদুল সিফাত। পরে গত ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় ৪ দিনে আরও চারজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

তৃতীয় দফায় দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত পাঁচজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। মামলায় দ্বাদশতম সাক্ষীসহ আরও ৭২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজনভ্যানে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।

পিপি ফরিদুল বলেন, মামলায় সাক্ষ্যদানের জন্য ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ২৩ জনকে আদালত নোটিশ দিয়েছিলেন। গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তিনদিনে মামলার বাদি ও ২ নম্বর সাক্ষী জবানবন্দি প্রদান করেন। দ্বিতীয় দফায় গত ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মামলায় ৪ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। তৃতীয় দফায় দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত আরও ৫ জন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, 'বুধবার সকাল ১০টায় থেকে দ্বাদশতম সাক্ষী হিসেবে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য সার্জেন্ট আইয়ুব আলীর জবানবন্দি গ্রহণের মধ্যদিয়ে তৃতীয় দফায় তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তিনি ঘটনার পর খবর শোনে সেখানে (ঘটনাস্থলে) গিয়েছিলেন। এ সময় ঘটনার পরবর্তী সেখানকার চিত্র নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিলেন। এছাড়া আদালতে সাক্ষ্যদানের জন্য আরও উপস্থিত রয়েছেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে সিনহার মৃতদেহ ময়নাতদন্তকারী আরেক চিকিৎসক শাহীন মো. আব্দুর রহমান।'

গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। 

এ ঘটনায় গত বছর ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদি হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামী করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলার তদন্ত ভার দেওয়া হয় র‍্যাবকে।

ঘটনার ৬ দিন পর ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৭ পুলিশ সদস্য আত্মসমপর্ণ করেন।

ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

পরে র‍্যাব পুলিশের দায়ের মামলার ৩ সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) এর ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে। সর্বশেষ গত ২৪ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব।

গত বছর ১৩ ডিসেম্বর র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

গত ২৭ জুন আদালত ১৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এতে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে।

এসএএম/এডিবি/