ন্যাভিগেশন মেনু

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর: মাদরাসার দুই শিক্ষকের স্বীকারোক্তি


কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনার মামলায় অভিযুক্ত চার আসামির মধ্যে মাদরাসার দুই শিক্ষক আল আমিন ও ইউসুফ আলী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক দেলোয়ার হোসেন তাদের জবানবন্দি নেন।

চার দিন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার বেলা ২টায় তাদের আদালতে নেয়া হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক নিশি কান্ত সরকার তাদের আদালতে নেন। পরে তারা জবানবন্দি দেন।

রবিববার (১৩ ডিসেম্বর) আলোচিত এই মামলার অন্যতম প্রধান দুই আসামি মাদ্রাসার দুই ছাত্র আবু বকর ওরফে মিঠুন (১৯) ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে পারেন।

আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে শিক্ষক ইউসুফ আলী জানিয়েছেন, তিনি মাদ্রাসা ইবনে মাসউদ কুষ্টিয়াতে হেফজ বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ঐ বিভাগের ১৭ জন ছাত্র পড়াশোনা করে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত আবু বকর ও নাহিদ একই বিভাগের শিক্ষার্থী। ঘটনার দুই-তিন দিন আগে ইউসুফসহ আবু বকর ও নাহিদ দুজনই কুষ্টিয়া শহরে মার্কেটে যায়। তখন শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি তাদের নজরে পড়ে। গত ৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ভাস্কর্য ভাঙচুর করে তারা। গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে তাদের যুক্ত থাকার বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তাদের মাদ্রাসা থেকে নিজ নিজ বাড়িতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ ভাঙচুরের ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তাদেরকে দেখালে অভিযুক্ত দুই জনকে চেনা সত্ত্বেও তারা স্বীকার করেননি।

অপর শিক্ষক আল আমিনও একইভাবে জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে তিনি জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, ঐ মাদ্রাসায় সবাই মোবাইলে ওয়াজ শোনে। বিশেষ করে মামুনুল হক, হাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবীসহ অন্যদের ওয়াজ শুনতে ভালো লাগতো। এই মাদ্রাসা শিক্ষকও একইভাবে অভিযুক্ত দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসা থেকে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে সরে যেতে পরামর্শ দেন।

প্রসঙ্গত, গত ৪ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর একদিন পর মাদ্রাসার ঐ দুই শিক্ষক ও দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে। পরে ৮ ডিসেম্বর পুলিশ গ্রেপ্তার চারজনকে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনামুল হকের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক শুনানি শেষে মাদরাসার দুই শিক্ষার্থী আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদের (২০) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে আদালত গ্রেফতার ওই মাদরাসার দুই শিক্ষক আল আমিন (২৭) ও ইউসুফ আলীর (২৬) চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এডিবি/