ন্যাভিগেশন মেনু

রোহিঙ্গা শিবিরে বাড়ছে চাঁদাবাজি, অপহরণ ও মাদকের বিস্তার


 আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাঁদাবাজি, অপহরণ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একের পর এক ভয়ঙ্কর সব অপরাধের ঘটনা বেড়েই চলেছে।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে অস্থিরতায় আর আতঙ্কে  রয়েছে স্থানীয়রা। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত তাদের ভাসানচরসহ অন্য জেলায় বা অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর করার দাবি জানিয়েছে কক্সবাজারের সুশীল মহল।

উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে একাদশ জাতীয় সংসদের 'স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি'র ২৬তম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপহরণ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক অপহরণকারী ও সন্ত্রাসীদের হুঁশিয়ারিও প্রদান করেন ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রী আরো বলেন, গোয়েন্দার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হবে।

কক্সবাজারে সুশীল সমাজের অন্যতম নেতা ডিএম রুস্তম জানান, এদেশে এসে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ এখন বিপুল টাকার মালিক বনে গেছে, জড়িয়ে পরছে বিভিন্ন অপরাধে তাই আর কোনো কথা নয় তাদের ধ্রুত এই দেশ থেকে  সরানোর দাবি তুলছেন তিনি।

কক্সবাজার সম্মিলিত নাগরিক আন্দোলন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মঈনুল হাসান চৌধুরী বলেন, উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা থেকে কিছু অংশ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। ফলে তারা গোটা দেশের জন্য যেমন হুমকিস্বরূপ তেমনি ক্যাম্পেও আধিপত্য বিস্তারে বিভক্তি সন্ত্রাসী কাযক্রম বাড়ায় সেখানে নিয়মিত হচ্ছে অপহরণ, মারামারি ও মাদক কারবার।

২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি এবং ২২ আগস্ট দুবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দিনক্ষণ ঠিক করা হলেও একজনও ফেরত যায়নি বরং তারা নতুন শর্ত দিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল করে ফেলেছে। মিয়ানমারের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে ও বিভিন্ন  শর্তের কারণে ভেস্তে গেছে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। এর আগে দুবার সরকারিভাবে প্রত্যাবাসনের সব আয়োজন হলেও কোনো রোহিঙ্গা ফিরে যায়নি নিজ দেশে। বরং জুড়ে দিয়েছিল নতুন শর্ত এতে অন্ধকারে তলিয়ে গেছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন।

প্রত্যাবাসনের পেছনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। মূলত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দেশীয় বিভিন্ন এনজিওকে ব্যবহার করে গোপনে প্রত্যাবাসন বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে রোহিঙ্গাদের মাঝে ফিরে না যাওয়ার দাবিগুলো উঠে আসছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলে চলেছে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ হয়নি রোহিঙ্গাদের।

এদিকে, গাজীপুরের টঙ্গীতে অনুষ্ঠিতব্য ২য় বিশ্ব ইজতেমায় আসার পথে ৭ শতাধিক রোহিঙ্গাকে আটক করেছে কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ। সদর মডেল থানার ওসি বলেন, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে থেকে রোহিঙ্গারা বাসে করে গাজীপুরে বিশ্ব ইজতেমার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে- এমন খবর পেয়ে কক্সবাজার আদর্শ গ্রাম এলাকার বাইতুন নূর আমান জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকা থেকে রোহিঙ্গাবোঝাই ১৯টি বাস জব্দ করা হয়।

ক্যাম্পজুড়ে অপহরণ আতঙ্কের পাশাপাশি উত্তেজনাও বিরাজ করছে। গত কয়েক দিনে ১৫ জন রোহিঙ্গাকে অপহরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিপণ  দিয়ে ফিরে এসেছে ৬ জন। বাকিরা এখনও অপরাধীদের হাতে জিম্মিদশায় রয়েছে। 

সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও এপিবিএন ও পুলিশের যৌথ অভিযানে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সংগঠন- আরসার শীর্ষ নেতা মাষ্টার সলিম ওরফে ইয়াহিয়া ও সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার আর তিন সদস্যকে আটক সহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ,এপিবিএন ও পুলিশের যৌথ অভিযানে অব্যাহত রয়েছে।