ন্যাভিগেশন মেনু

শালুকের কদর এখন দেশজুড়ে


হাওরের পানিতে অযত্নেই বেড়ে উঠা সবজি শালুক ছিল অভাবী মানুষের খাবার। কিন্তু এখন উৎপাদন কমে যাওয়ায় এর কদর দেশজুড়ে। বর্তমানে শালুক পুষ্টি সন্ধানীদের কাছেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে বেশ।

উৎপাদনের খরচ নেই, শুধু পানি থেকে তুলে আনার কষ্টটুকু মেনে নিলেই উপার্জনের সুযোগ। সেজন্য শালুক তুলতে আগ্রহী হাওরপারের অনেক মানুষ। অন্যদিকে সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে কিনে দিগুণ মূল্যে বিক্রি করছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। সেজন্য বাজারে শালুক এখন আকর্ষণীয় পণ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বড় শহরগুলোতে শালুকের দাম ভিন্ন। তবে হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন বাজারের ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ অথবা ৮০ টাকায়। দোকানীর মজুদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভীড় লেগেই থাকে টুকরির সামনে। এসব বিবেচনায় বাণিজ্যিকভাবে শালুক চাষ হলে আসতে পারে ভালো সফলতা; এমন ধারণা বিশ্লেষক এবং কৃষি বিভাগের।

লাখাই উপজেলার বুল্লা বাজারে টুকরীতে করে শালুক বিক্রি করছিলেন বয়স চল্লিশের জানু মিয়া। খুচরা বিক্রি দিনে প্রায় ৫০ কেজি। তিনি জানালেন, বোনা আমনের জমি বেড়ে যাওয়ায় শালুকের উৎপাদন কমেছে। তবে এখনও লাখাই উপজেলার পাঁচটি হাওরের পানিতে শালুক পাওয়া যায়।

শুধু লাখাই উপজেলায়ই নয়, হবিগঞ্জ সদর, বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ এবং বাহুবল উপজেলার বিভিন্ন হাওরে এখনও শালুক পাওয়া যায়। জেলা শহরের বাজারগুলোর ফুটপাতে শালুক বিক্রি করেন অনেক ছোট দোকানী।

এ বিষয়ে লাখাইয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য্য জানান, ‘একসময় হাওরে ব্যাপকভাবে শালুক উৎপাদন হতো। তবে বোনা আমনের জমি আবাদ বেড়ে যাওয়ায় এখন তা কমেছে। সরকারিভাবে একবার বাণিজ্যিকভিত্তিতে শালুক চাষের উদ্যোগ নিলেও পরবর্তীতে এর অগ্রগতি হয়নি। এটা করতে পারলে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, শালুক অত্যন্ত উপকারী। এটি সবজি হিসেবে কাঁচা, সেদ্ধ করে ও পুড়িয়ে খাওয়া যায়। শরীরে খাদ্যশক্তির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এই সবজি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়া চুলকানি ও রক্ত আমাশয় নিরাময়ে শালুক বেশ উপকারী। একটি ১০০ গ্রাম ওজনের শালুকে  খনিজ পদার্থ রয়েছে ১.৩ গ্রাম, আঁশ ১.১ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ১৪২ কিলোক্যালোরি, প্রোটিন ৩.১ গ্রাম, শর্করা ৩১.৭ গ্রাম এবং ক্যালসিয়াম ৭৬ মিলিগ্রাম।

বিএ/এমআইআর/এডিবি