ন্যাভিগেশন মেনু

সি আর দত্তের মৃত্যুতে নিউইয়র্কে মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি


রণাঙ্গনের কমান্ডার মেজর জেনারেল সি আর দত্তের মৃত্যুতে গভীর শোক এবং দীর্ঘ কর্মজীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করলেন প্রবাসের মুক্তিযোদ্ধারা। একইসাথে তার পরিবারের সদস্যগণের প্রতিও সমবেদনা জানালেন মুক্তিযোদ্ধারা।

মঙ্গলবার (২৫ অগাস্ট )সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের উদ্যোগে ‘কমান্ডারের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনিষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি।

এ সময় জেনারেল দত্তের আত্মার শান্তি কামনা এবং তার রেখে যাওয়া নীতি ও আদর্শ প্রবাস-প্রজন্মে লালন ও বিকাশের সংকল্প ব্যক্ত করেন ফোরামের কোষাধ্যক্ষ আলিম খান আকাশ, নারী বিষয়ক সম্পাদক সবিতা দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক উইলি নন্দি, মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল পাশা মানিক, তরুণ প্রজন্মেও গীতিকার-সুরকার শামীম আকতার শরিফ এবং মুজিব আদর্শের সৈনিক হুমায়ূন কবীর।

শুরুতে সকলে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করেন সি আর দত্তের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার সি আর দত্ত ২৪ আগস্ট সোমবার রাত সোয়া ১১টায় ফ্লোরিডায় বয়েন্টনবীচের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরলোকগমন করেছেন। তার লাশ বাংলাদেশে নিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাহ করা হবে বলে পারিবারিকভাবে জানানো হয়েছে।

মৃত্যুকালে ৩ কন্যা ও এক পুত্রসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন জেনারেল দত্ত। পুত্র-কন্যার সকলেই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বাস করছেন। বাবার কফিনের সাথে ঢাকায় যাবার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার জেনারেল দত্তের লাশবাহি কফিন ঢাকার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবে।

শ্রদ্ধাঞ্জলি সভায় যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি ও এই ফোরামের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক হাজী আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, সি আর দত্ত চলে যাওয়ায় মানবতার অগ্রগতির ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। কারণ, ধর্মীয় সম্প্রীতির জগতে তিনি ছিলেন এক অনন্য উদাহরণ।

সভায় সি আর দত্তের সাথে গত এক দশকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার বলেন, ‘জাগতিক নিয়মে সকলকেই চলে যেতে হয়। তবে প্রায় ৯৪ বছর বয়েসী সি আর দত্তের চলে যাবার ঘটনাটি দেশ, প্রবাস এবং সমগ্র বাঙালি জাতির জন্যে এক অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করছি। তার দেশপ্রেম এবং পেশাগত নিষ্ঠাকে সকলে হৃদয়ে ধারণ করলেই প্রয়াত এই সেক্টর কমান্ডারের প্রতি যথার্থ সম্মার জানানো হবে।’

ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল বাশার চুন্নু বলেন, সি আর দত্তের মৃত্যুতে যে ক্ষতি হলো বা শুন্যতার সৃষ্টি হলো তা কখনো পূরণ হবার নয়।

এদিন রাতে যুক্তরাষ্ট্রস্থ বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উদ্যোগেও একটি ভার্চুয়াল শোক সভা হয় সি আর দত্তের মহাপ্রয়াণে। সকলেই তার আত্মার শান্তি কামনা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক নব্যেন্দু বিকাশ দত্ত। সি আর দত্তের মেজ কন্যা ব্যারিস্টার চয়নিকা দত্ত কানাডার টরন্টো থেকে অংশ নিয়ে তার বাবার আত্মার চিরশান্তির জন্যে সকলের আশির্বাদ কামনা করেন। ঐক্য পরিষদের অন্যতম সমন্বয়কারি শিতাংশু গুহের সমন্বয়ে এ শোক সভায় ঢাকা, কলকাতা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন স্থানের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। এরমধ্যে ছিলেন রানা দাসগুপ্ত, দীপু সেন প্রমুখ।

সিবি/এস এস