ন্যাভিগেশন মেনু

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে নিউ ইয়র্কে বিক্ষোভ


কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে নিউ ইয়র্কে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজাতেে সচেতন বাঙালি নাগরিক সমাজ এ আয়োজন করে। 

প্রতিবাদ সমাবেশে মূল অপরাধীদের গ্রেপ্তারসহ ৩ দফা দাবি জানানো হয়।

সমাবেশের সমন্বয়ক সাংবাদিক ও নাট্যকার তোফাজ্জল লিটন সমাবেশের পক্ষে সরকারের কাছে দাবি জানান, ৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যেতে হবে।  বিজ্ঞানভত্তিক একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা ও ধর্মীয় উস্কানিদাতাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

সমাবেশে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা শেখ রাসেল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডক্টর আব্দুল বাতেন বলেন, একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। যারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চায় না তারা সাম্প্রদায়িক কোন রাষ্ট্রে চলে যাক। 

মানবাধিকার কর্মী ও ও কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মুজাহিদ আনসারী বলেন, আড়াইশো বছর আগে বাংলা স্বাধীনতা হারিয়েছিল পলাশীর প্রান্তরে। বহু আরাধনার পর বঙ্গবন্ধুর মতো এক মহামানবের জন্ম হয়েছিল বলে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। সেই বঙ্গবন্ধুকে  স্বাধীনতার ৫০ বছরে প্রারম্ভে তাকে অপমান করা হয় তার ভাস্কর্য ভেঙে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, আর কার অপমান দেখার অপেক্ষা করছেন আপনি। আর কার অপমান হলে আপনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন এই মৌলবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। 

বাংলাদেশ গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি বলেন, লালনের ভাস্কর্য ভাঙা, থেমিসের ভাস্কর্য অপসারণ এবং সনাতন ধর্মালম্বীদের মূর্তি ভাঙ্গার পর আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। সরকার নীরব ভূমিকা পালন করেছে। আজ এই ধর্মীয় উগ্রবাদীরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার আস্ফালন দেখিয়েছে। কাল তারা আপনার ঘরে গিয়ে আপনার বাবার ছবি ছিড়ে ফেলবে। মায়ের বোরখা পড়া না পড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। এখনো যদি আপনি পথে না নেমে প্রতিবাদ করেন, তাহলে বাংলাদেশের জন্য দুর্বিষহ সময় অপেক্ষা করছে।

চলচ্চিত্র নির্মাতা রওশন আরা নীপা বলেন, মূর্তি হোক ভাস্কর্য হোক এর পার্থক্য অথবা বিভেদ নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই। রাষ্ট্র হবে অসম্প্রদায়িক। ব্যক্তিগত জীবনের যে যার ধর্ম পালন করবে। রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকতে পারে না। 

সাপ্তাহিক সন্ধান পত্রিকার সম্পাদক সঞ্জীবন সরকার বলেন,  ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের এখনই না থামালে বাংলাদেশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আসা মনীষা দত্ত তৃষা বলেন, এখানে পড়ালেখা শেষ করে বাংলাদেশে ফিরে যাবো এই প্রত্যাশা নিয়ে এখানে এসেছি। কিন্তু যেখানে বাংলাদেশের স্থপতিকে অপমান করা হয়, সেখানে আমার মতো মানুষ দেশে ফিরে গিয়ে কতো নির্বিঘ্নে জীবন যাপন করতে পারবে প্রশ্ন জাগে। 

সাংবাদিক আবদুল হামিদ বলেন, আমাদের কুষ্টিয়া শহরে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের লজ্জিত করেছে। দেশব্যাপী সংস্কৃতিক আন্দোলন এবং পাড়ায়-মহল্লায় পাঠাগার স্থাপন করতে হবে। মূলত অশিক্ষার জন্যই দেশে মৌলবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। 

স্বাধীন মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ তার সংবিধান অনুযায়ী চলছে। যারা সংবিধানের বিরোধিতা করবে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। 

এডিবি/