ন্যাভিগেশন মেনু

স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: কৃষিমন্ত্রী


স্বাধীনতাবিরোধী ও দেশবিরোধী সব অপশক্তির বিরুদ্ধে বাম দল, কৃষক শ্রমিকসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

শনিবার (১৪ মে) দুপুরে রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের ৭ম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে স্বাধীনতাবিরোধী, ধর্মান্ধ ও দেশের উন্নয়নবিরোধী অপশক্তিরা এখনও খুবই তৎপর ও নানা পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তারা দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। দেশটাকে স্বাধীন করার জন্য ১৪ দল, ওয়ার্কার্স পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন বাম রাজনৈতিক দল আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। এখন স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আছে বলেই আমরা সারা বিশ্বে দেশটাকে মর্যাদা ও সম্মানে অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরতে পেরেছি। কাজেই অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশের বাম দল, কৃষক শ্রমিকসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই বাংলাদেশে মানুষকে সারের জন্য জীবন দিতে হয়েছে। কৃষকরা সারতো ভিক্ষা চাইতে যায়নি। সারের জন্য ৯৫ /৯৬ সালে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। কৃষক সার পেতনা। সারের জন্য প্রতিদিন কৃষক ডিলারের দোকানে বসে থাকতো। বিএনপি আমলে তিন হাজার টাকার টিএসপি সার কালোবাজারে পাঁচ হাজারে বিক্রি হতো। আমরা ১৪ দল ক্ষমতায় এসে ৯০ টাকার ডিএফপি সার ২৫ টাকা করি। টিএসপি সারের দাম ৮২ টাকা থেকে ২২ টাকা করি। ৬০ টাকার পটাশিয়াম সার ১৫ টাকা করেছি।

বর্তমান সরকার কৃষি এবং পল্লী বান্ধব উল্লেখ করে তিনি বলেন, পটাশিয়াম সারের দাম প্রতি টন ৩০০ ডলার ছিল, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং করোনা মহামারীর কারণে গত মাসে সেই সারের দাম এক হাজার ২০০ ডলার হয়েছে। আমরা সাত থেকে আট হাজার কোটি টাকা সারের দাম কমানোর জন্য ভর্তুকি দিতাম। এই (আসন্ন) অর্থ বছরে সারের দাম কমানোর জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। 

বিএনপির আমলে উন্নয়ন বাজেট ছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। ২০০৯ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে উন্নয়ন বাজেট ছিল ২৩ হাজার কোটি টাকা। আর আমরা ৩০ হাজার কোটি টাকা কৃষককে সারের জন্য ভর্তুকি দিচ্ছি। ’’ যোগ করেন আবদুর রাজ্জাক।  

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিদিন অর্থমন্ত্রী-অর্থসচিব আমাকে বলছেন, ড. রাজ্জাক কিভাবে আমরা দেশ চালাবো, দেশের উন্নয়ন কিভাবে হবে। দেশে রাস্তাঘাট বানাবো না, কলকারখানা স্কুল কলেজ করবো না, শুধু কৃষি খাতে এত ভর্তুকি কোথা থেকে দেব? এত রাজস্ব কি আমরা পাই?

‘আমি তখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বললে, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেন, ওদের বলতে দাও, যতদিন পারি কৃষককে দেই আমরা। এই ভর্তুকির টাকা সকল কৃষক পায়। গ্রামের মানুষের কাছে এই ত্রিশ হাজার কোটি টাকা যায়। ’’ বলেন কৃষিমন্ত্রী। 

কৃষি ফার্ম শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বলা হয় কৃষি শ্রমিকদের নিয়মিত করলে তারা কাজে ফাঁকি দেয়। নিয়মিত না থাকলে তারা ভয় পেয়ে ঠিকমতো কাজ করেন। এই দুর্বলতা কার- শুধু কৃষি শ্রমিকদের? যারা তাদের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে তাদের কোনো দুর্বলতা রয়েছে কি না- সেগুলো বিবেচনা করে, যেসব শ্রমিক সারা বছর কাজ করে নিয়মিত করার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে। 

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং রাশেদ খান মেনন এমপি।  

সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ।