ন্যাভিগেশন মেনু

হাথরাস গণধর্ষণ কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ যোগীর


উত্তর প্রদেশের হাথরাস গণধর্ষণ ও খুনের (Hathras Gang Rape) ঘটনায় জ্বলছে গোটা ভারত।

এ নিয়ে বড়সড় প্রশ্নের মুখে যোগীরাজ্যের পুলিশ। তাই চাপে পড়ে শেষমেশ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

উত্তর প্রদেশের হাথরসের দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে উত্তাল গোটা দেশ। সুবিচারের দাবিতে সোচ্চার আমজনতা থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। উন্নাও-কাণ্ডের পর আবার বড়সড় প্রশ্নের মুখে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের ভূমিকা।

প্রশ্নের মুখে রাজ্য পুলিশও। নির্যাতিতার ধর্ষণ, খুন এবং রাজনৈতিক টানাপোড়নের রেশ চলছে।

হাথরসের ছোট একটি গ্রাম বুলা গড়হী। দলিত তরুণীর গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গত দু’সপ্তাহ ধরে দেশের নজরে এই গ্রাম।গত ১৪ সেপ্টেম্বর মায়ের সঙ্গে বাড়ির অদূরেই খেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন বছর উনিশের ওই তরুণী।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, মায়ের থেকে কিছুটা দূরেই ছিলেন তিনি। আচমকাই উচ্চবর্ণের চার যুবক সেখানে এসে তরুণীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাঁকে খেতের ভিতরে টেনে নিয়ে যায়। সেখানেই গণধর্ষণ করা হয় তাঁকে।

অকথ্য শারীরিক অত্যাচার চালানোর পর তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। তার পর তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় ফেলে রেখে সেখান থেকে পালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বেশ কিছু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর মেয়ের সাড়াশব্দ না পেয়ে তরুণীর মা তাঁকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। খেতের ভিতর থেকে গোঙানির শব্দ পেয়ে সেখানে ঢুকতেই গুরুতর জখম অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পান।

তরুণীকে প্রথমে স্থানীয় চাঁদ পা থানায় নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। তাঁদের অভিযোগ, অভিযোগ না নিয়ে তাঁদের ফিরিয়ে দেয় থানা। এর পর ওই তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয় জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে। ২২ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে মারা যান তিনি।

ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে তরুণীকে বারবার শ্বাসরোধ করার চেষ্টার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর গলায় শ্বাসরোধ করার চিহ্নও পাওয়া গিয়েছে। তবে চিকিৎসকদের দাবি, শ্বাসরোধের জেরে মৃত্যু হয়নি ওই তরুণীর। বলা হয়েছে, তরুণীর ‘সি ৬ কশেরুকা’ (ঘাড়ের অংশের হাড়) ভেঙে গিয়েছিল।

সেখান থেকে অতিরিক্ত রক্তপাতই তাঁর মৃত্যুর কারণ। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টে দাবি করা হয়, তরুণীর গোপনাঙ্গে ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। তবে ‘পেনিট্রেটিভ রেপ’ হয়নি। ফরেন্সিক রিপোর্টে বলা হয়, মৃতার গোপনাঙ্গে শুক্রাণুর নমুনা মেলেনি।

এদিকে, দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় শনিবার নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা।  পৃথিবীর কোনও শক্তিই নির্যাতিতার পরিবারের মুখ বন্ধ করতে পারবে না বলেই জানিয়েছেন রাহুল গান্ধী। নির্যাতিতার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া প্রয়োজন বলেই মত প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর।  

গত ১৪ সেপ্টেম্বর যোগীর উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) হাথরাস জেলার ওই দলিত তরুণী ধর্ষণ এবং নৃশংসতার শিকার হন। দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে দু’সপ্তাহ ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পরে মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

বুধবার রাত একটা নাগাদ ওই তরুণীর দেহ পৌঁছয় তাঁর গ্রামে। বড় রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড় করানো হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় শ্মশানের আলো। শেষকৃত্যের প্রস্তুতি শুরু করে পুলিশ। মধ্যরাতে শেষকৃত্য হোক তা চাননি নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা।

গত বুধবার রাতের যে ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, মেয়েকে শেষবার নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য তরুণীর মা’কে পুলিশের কাছে অনুনয় করতে দেখা গিয়েছে।

হাথরাসের পুলিশের তরফে টুইট করে শেষকৃত্যের বিষয়ে জানানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, মৃতার পরিবারের ইচ্ছানুসারেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।

এস এস