ন্যাভিগেশন মেনু

হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণ দিবস আজ


জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী রবিবার (১৯ জুলাই)। নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১২ সালের আজকের এই দিনে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর প্রয়াণে পুরো দেশে নেমে আসে শোকের ছায়া। তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় ২৩ জুলাই। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে লাখো মানুষের অশ্রু-পুষ্প ও ভালোবাসায় সিক্ত হন জননন্দিত এই লেখক-নির্মাতা। পরদিন তাঁকে সমাহিত করা হয় তাঁরই গড়া নন্দনকানন নুহাশপল্লীর লিচুতলায়।

১৯৭২ সালে প্রকাশিত নন্দিত নরকে উপন্যাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যজীবন।

৬৩ বছরের জীবনে লেখা বইয়ের সংখ্যা তিন শতাধিক। একইসঙ্গে জনপ্রিয় নাটক কোথাও কেউ নেই, আয়োময়, আজ রবিবারের কাহিনীকার ও নির্মাতা তিনি। পরিচালনা করেছেন আটটি চলচ্চিত্র। চার বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

তার পরিচালিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে আগুনের পরশমণি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা ও নয় নম্বর বিপদসংকেত, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ প্রভৃতি।

চলচ্চিত্র বা নাটকের জন্য হুমায়ূন আহমেদ গান লিখেছেন, আবার তাতে সুরও দিয়েছেন, তা সমাদৃত হয়েছে।

‘যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো ’, ‘চাঁদনী পসরে কে’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’, ’এক যে ছিল সোনার কন্যা’, ‘আমার ভাঙ্গা ঘরে ভাঙ্গা বেড়া ভাঙ্গা চালার ফাঁকে’, ‘চাঁদনী পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়’ হ‌ুমায়ূন আহমেদের লেখা এসব গান আজো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।  

হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আর মা ছিলেন গৃহিণী। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়ো। কথাসাহিত্যিক জাফর ইকবাল তার ছোটো ভাই। সবার ছোটো ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক।

বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন।

তিনি এমন একজন অমর কথাসাহিত্যিক, যিনি যুগ থেকে যুগান্তর বেঁচে থাকবেন তাঁর রচিত গল্প, উপন্যাস, নাটক, চলচ্চিত্র, গান ইত্যাদি  অনবদ্য সৃজনকর্মে। শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় তিনি অক্ষয় থাকবেন কোটি-কোটি ভক্ত, পাঠক, দর্শক আর শুভানুধ্যায়ীর অন্তরে।

ওআ/