ন্যাভিগেশন মেনু

২০২১ সালে বাজারে আসছে দেশে তৈরী বৈদ্যুতিক গাড়ি


আগামী বছরের মাঝামাঝি বাংলাদেশি ব্র্যান্ড নামে বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে আনছে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে এ কারখানায় তৈরী হবে বৈদ্যুতিক গাড়ি। বর্তমানে কারখানা তৈরীর কাজও অনেকটাই এগিয়েছে।

বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজের বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, আর্থিকসহ নানা খাতে ব্যবসা রয়েছে। বাংলাদেশে গাড়ি তৈরির এ কারখানার অংশীদার চিনা প্রতিষ্ঠান ডংফেং মোটর গ্রুপ লিমিটেড। 

ডংফেং মোটর গ্রুপ লিমিটেড চিনের শীর্ষস্থানীয় গাড়ি নির্মাতার একটি। তাদের আবার জাপানের হোন্ডা, নিশান, ফ্রান্সের সিটরয়েনসহ জাপানি ও ইউরোপীয় কয়েকটি গাড়ি নির্মাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের কারখানা রয়েছে।

বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এ মান্নান খান বলেন, ‘আমরা গাড়ি সংযোজন নয়, উৎপাদন করবো। মূল্য সংযোজন দাঁড়াবে ৭০ শতাংশের মতো। অদূর ভবিষ্যতে বৈদ্যুতিক গাড়ির বড় বাজার তৈরি হবে। এটা মাথায় রেখেই আমাদের এই বিনিয়োগ।’

কারখানার জন্য বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ জমি নিয়েছে মোট ১০০ একর। বিনিয়োগের লক্ষ্য ১ হাজার কোটি টাকা। এ জমিতে তারা গাড়ির যন্ত্রাংশ ও ব্যাটারি তৈরির জন্য আলাদা দুটি কোম্পানি গঠন করে আলাদা কারখানা করছে। একটির নাম বাংলাদেশ লিথিয়াম ব্যাটারি লিমিটেড, যার অংশীদার হংকংয়ের জিয়াংসু রুইহং লিথিয়াম কোম্পানি লিমিডেট। আরেকটির নাম মোটর টেকনোলজি লিমিটেড, যার অংশীদার চিনের উহান সায়ান পাওয়ার টেকনোলজি কোম্পানি।

বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ জানায়, ‘তাদের কারখানার ভৌত কাজ ৬০ শতাংশের মতো শেষ হয়েছে। যন্ত্রপাতি অনেকটাই চট্টগ্রাম বন্দরে এসে গেছে। চিনা, ইউরোপিয় ও কোরিয় কর্মী নিয়োগ শেষ। তারা বছরে ৩৫ হাজার ব্যক্তিগত গাড়ি বা প্রাইভেট কার, ৫০ হাজার তিন চাকার যান ও ১ লাখ ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করেছে।’

বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজকে বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিন্যান্স ফান্ড লিমিটেডের (বিআইএফএফএল) নেতৃত্বে তিনটি ব্যাংকের ৩৩২ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার কথা। কিন্তু মাঝপথে এসে তারা জমি ইজারাসংক্রান্ত জটিলতায় ঋণ দিতে চাইছে না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এ মান্নান খান বলেন, ‘ঋণ দাতারা বলছে বেজার কাছ থেকে ইজারা নেওয়া জমিতে বিনিয়োগকারীর স্বত্ব নেই। আমরা বিষয়টির একটা সুরাহা চাই।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে গাড়িশিল্প-সংক্রান্ত তিনটি প্রতিষ্ঠান জমি নিয়েছে। এর মধ্যে উত্তরা মোটরস নিয়েছে ৫০ একর। তারা বিনিয়োগ করবে ২৮৭ কোটি টাকা।

ইস্পাত খাতের সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান জিপিএইচ ইস্পাতের স্টার অ্যালাইড ভেঞ্চার টায়ার কারখানার জন্য ৫০ একর জমি নিয়েছে। তাদের বিনিয়োগ প্রস্তাব ৭৫০ কোটি টাকা। 

এ ছাড়া রানার অটোমোবাইলস ও ইফাদ অটোস জমি নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছে বেজা।

বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে জাপানের সুপরিচিত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মিতসুবিশির ভাইস প্রেসিডেন্ট এ বছরের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর পরিদর্শন করেছেন। 

জাপানের আরেক গাড়ি নির্মাতা কাওয়াসাকিও বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছে বেজা।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা গাড়ি নির্মাতাদের জন্য আরও ৫০০ একর জমি রেখেছি। দেশে ব্যক্তিগত গাড়ি, বাণিজ্যিক যান ও মোটরসাইকেলশিল্প স্থাপনের একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা সুযোগটি কাজে লাগাতে চাই। শুধু বাংলাদেশের বাজার নয়, আশপাশের দেশেও গাড়ি, যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ বাংলাদেশে তৈরি করে রপ্তানি করা যেতে পারে।’

এমআইআর/ এডিবি