ন্যাভিগেশন মেনু

২০ বছরে লোকসান ৪০০ কোটি: বন্ধ হতে যাচ্ছে পাবনা চিনিকল!


গত ২০ বছরে ৪০০ কোটি টাকার বেশি লোকসানে পড়ায় বন্ধ হতে যাচ্ছে পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়াতে অবস্থিত ‘পাবনা সুগার মিল।’ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত হলে মিলটি বন্ধের বিষয়টি চুড়ান্ত হবে।

এদিকে মিলটি যেনো বন্ধ না হয় এবং চিনিশিল্পের স্বার্থ রক্ষার্থে পাঁচ দফা নিয়ে বাংলাদেশ চিনি শিল্প করপোরেশন শ্রমিক-কর্মচারি ফেডারেশন দেশজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।

এদিকে, শনিবার (২১ নভেম্বর) থেকে চিনিকলের গেটে সভা, বিক্ষোভ, মানববন্ধন এবং চলতি বছরে আখমাড়াই মৌসুমের তারিখ নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো চিনিকল ‘বয়লার স্লো ফায়ারিং’- করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাবনা সুগার মিল ছাড়াও বন্ধের তালিকায় রয়েছে কুষ্টিয়া, সেতাবগঞ্জ, রংপুর, শ্যামপুর ও পঞ্চগড়ের ৫টি সুগার মিল।

পাবনা সুগার মিল সুত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিযনের পাকুড়িয়া মৌজার ৬০ একর জমির উপর পাবনা সুগার মিল স্থাপন করা হয়। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে আখমাড়াই মৌসুমে মিলটির পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়। মিলটি ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে বাণিজ্যিকভাবে চিনি উৎপাদন শুরু করে। চালুর পর থেকেই উৎপাদন ঘাটতি ও লোকসান শুরু হয়। সেই থেকে এ পর্যন্ত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।

মিলের এক কর্মকর্তা জানান, চলতি মৌসুমে পাবনা চিনিকলে ৮০ হাজার মেট্রিকটন আখমাড়াই করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। মিল জোনে এ বছর ৫ হাজার ২০০ একর জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। এর বিপরীতে মিল কর্তৃপক্ষ কৃষকদের প্রায় ৪ কোটি টাকার ঋণ প্রদান করেছে।

বাংলাদেশ আখচাষি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত কৃষক শাজাহান আলী বলেন, ঈশ্বরদীতে কয়েক হাজার কৃষক এ বছরও তাদের জমিতে আখচাষ করেছেন। আখগুলো কাটার উপযোগী হয়ে উঠেছে। এই মুহুর্তে যদি মিল বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে এই বিপুল সংখ্যক কৃষক চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। 

পাবনা সুগার মিল ওয়াকার্স ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, এমনিতে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা ৬ মাসের বেতন পাননি। এর মধ্যে মিল বন্ধের খবরে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

পাবনা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাইফ উদ্দিন মিল বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মিল বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে কোনো চিঠি পাইনি। তবে মিল বন্ধ হওয়ার কথা শুনেছেন বলে তিনি জানান। 

জেএইচ/এডিবি