ন্যাভিগেশন মেনু

অগ্নিঝরা মার্চ

৯ মার্চ ১৯৭১: বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে ভাসানীর একাত্মতা


১৯৭১ সালের এই দিন ঢাকা ছিল মিছিল, সমাবেশে উত্তাল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সর্বাত্মক অসহযোগে সমগ্র প্রশাসন স্থবির হয়ে পড়ে।

স্বাধিকার আন্দোলনের কর্মসূচি অনুযায়ী সচিবালয়, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস, হাইকোর্ট ও জেলা কোর্টসহ বিভিন্ন অফিস-আদালতে হরতাল পালিত হয়।

এই দিনে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মধ্যে সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

বিকেলে পল্টন ময়দানের জনসভায় তুমুল করতালির মধ্যে ভাসানী বলেন, “প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকেও তাই বলি, অনেক হয়েছে আর নয়। তিক্ততা বাড়াইয়া আর লাভ নাই। লাকুম দ্বীনুকুম ওয়াল ইয়া দ্বীন। অর্থাৎ ‘তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার’ এই নিয়মে পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করিয়া লও”। 

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ মুজিবের সঙ্গে মিলে ১৯৫২ সালের মতো তুমুল আন্দোলন শুরু করবো। 

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের ১৯৭১ সালের নৃশংসতা অমার্জনীয়: প্রধানমন্ত্রী

ভাসানী বলেন, খামাখা কেউ মুজিবুরকে অবিশ্বাস করো না। মুজিবুরকে আমি ভালোভাবে চিনি।’

বঙ্গবন্ধু যেসব সরকারি অফিস খুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন কেবল সেসব অফিস ছাড়া সারাদেশে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচি অনুযায়ী হরতাল পালিত হয়।

জাতিসংঘের মহাসচিব উ থান্ট প্রয়োজনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে জাতিসংঘের স্টাফ ও তাদের পরিবারবর্গকে প্রত্যাহারের জন্য ঢাকাস্থ জাতিসংঘের উপ-আবাসিক প্রতিনিধিকে নির্দেশ দেন। 

জাপানের পররাষ্ট্র দপ্তর পূর্ববঙ্গে অবস্থিত তার দেশের নাগরিকদেরও প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। তৎকালীন পশ্চিম জার্মান সরকার তার দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সামরিক প্লেন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

সেদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় অনুষ্ঠিত ছাত্রলীগ ও ডাকসুর নেতৃত্বে গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ছাত্রসভায় গৃহীত 'স্বাধীন বাংলাদেশ' ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন হয়।

এইদিন সামরিক কর্তৃপক্ষ রাত ৯টা থেকে রাজশাহী শহরে আট ঘণ্টার জন্য কারফিউ জারি করে। 

রাজশাহীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিদিন নৈশ কারফিউ জারির পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সেনাবাহিনীকে ছাউনিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে ঘোষণার পর রাজশাহীতে হঠাৎ সান্ধ্য আইন জারির কারণ বোধগম্য নয়। 

বিবৃতিতে অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। সকালে পিআইএর বাঙালি কর্মচারীরা তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে মিছিল করে ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে এলে তিনি তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

ওআ/এডিবি