ন্যাভিগেশন মেনু

বিএনপির অপরাজনীতির কারণেই ঢাকায় মার্কিন নাগরিকদের প্রতি সতর্কতা: তথ্যমন্ত্রী


তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে অবস্থানকারী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বাইরে চলাফেরার ব্যাপারে সতর্ক করেছে দেশটির দূতাবাস। আর এটি বিএনপির অপরাজনীতির ফসল।

সোমবার (২২ মে) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে টেলিভিশন নাট্যপরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তথ্য সচিব মো. হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি ও তাদের শরিক দলগুলো যদি এরকম জ্বালাও-পোড়াও-ভাঙচুর করতে থাকে তাহলে আরও অনেক দেশ এরকম সতর্কতা জারি করতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি বিএনপির অপরাজনীতির ফসল।

গতকাল (রবিবার) ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে একটি সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। মূলত আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে যেকোনো ধরনের অস্থিতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশে অবস্থানকারী মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন করে চলাফেরা করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এটি করা খুবই স্বাভাবিক। কারণ বিএনপি যেভাবে আবার গাড়ি ভাঙচুর করা শুরু করেছে, আবার যেভাবে গাড়িতে আগুন দেওয়া শুরু করেছে, এগুলো দেখেইতো যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের সতর্ক করেছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গত পরশুদিন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক প্রকাশ্যে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। এতেই প্রমাণিত হয় বিএনপি আসলে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে। বিএনপির নেতাদের ও দলের মধ্যে এই বিষয়টাই ঘুরপাক খাচ্ছে। আর সেটা মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়কের মুখ দিয়ে। বিএনপির রাজনীতি যে অপরাজনীতি... হত্যা ও খুনের রাজনীতি সেটি থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারেনি।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠানগুলোর মান নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশ বিবেচনায় নিলে মানুষ বাংলাদেশ টেলিভিশনই বেশি দেখে। বিটিভি’র অনুষ্ঠানে বহু গুণগত পরিবর্তন এসেছে। যে কোনো টেলিভিশনের চেয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রোগ্রামের মান এখন অনেক উন্নত।’

নাটক, টেলিফিল্ম, সিনেমাতে সমাজের জন্য বার্তা থাকা দরকার : এর আগে ডিরেক্টরস গিল্ডের সঙ্গে সভায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা সব টেলিভিশনকে উৎসাহ দিচ্ছি যাতে তারা বাংলাদেশের শিল্পী, কলাকুশলীদের নিয়ে দেশের কৃষ্টি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সিরিয়াল বানায়। একইসাথে সেগুলো যেন সমাজকে ভালো জিনিস শেখায়। যে কোনো সিরিয়াল বা নাটক যেমন বিনোদন দেবে পাশাপাশি যদি সেখানে সমাজ হিতৈষী বার্তা থাকে, তাহলে সেটিকে আমি যথার্থ এবং পরিপূর্ণ মনে করি।

ডিরেক্টরস গিল্ড সভাপতি অনন্ত হীরা সংগঠনের পক্ষে তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টে ডিরেক্টরস গিল্ডের একজন প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্তি, টেলিফিল্মকে আলাদা ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আওতায় আনা এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে কর্মরতদের পেশার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তাব উত্থাপন করেন তিনি। সহ-সভাপতি মনোজ সেনগুপ্ত বিটিভিতে ডিরেক্টরস গিল্ড সদস্যদের পালাক্রমে কাজে সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার প্রস্তাব দেন।

মন্ত্রী প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে টেলিভিশনের সংখ্যা যতো বৃদ্ধি পাচ্ছে নাটকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে, দেশি সিরিয়াল বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটি ক্রমবর্ধমান সেক্টর। আমরা বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে যথেচ্ছভাবে বিদেশি সিরিয়াল প্রচারের লাগাম টেনে ধরেছি। কোনো টেলিভিশন চ্যানেলে এক সাথে একটার বেশি সিরিয়াল প্রচার করতে দিচ্ছি না। অনেক দেশের সিরিয়াল দেখানোর জন্য যেমন আমাদের কাছে আবেদন আসে কিন্তু আমরা সবগুলো দেই না কারণ সেসব দেশের সমাজ ব্যবস্থার সাথে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা ভিন্ন। এতে অনেক টেলিভিশন সতর্ক হয়েছে এবং তারা নিজেরা সিরিয়াল বানাচ্ছে। আগে এ বিষয়ে অনুমতির বালাই ছিলো না, প্রধানমন্ত্রী আমাকে এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে আমরা এ ব্যবস্থা নিয়েছি।’

তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো: হুমায়ুন কবীর খোন্দকার ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশ’র নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদ ও সকল সদস্যকে অভিনন্দন জানান এবং দেশ ও দশের সেবায় তাদের আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান। ডিরেক্টরস গিল্ড কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের মধ্যে সহ-সভাপতি কায়সার আহমেদ, আশরাফুল আলম রন্টু, সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান সাগর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান ও রাশেদা আক্তার লাজুক, অর্থ সম্পাদক আবু রায়হান মো: জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম রেজা জুয়েল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জহির খান, প্রশিক্ষণ ও আর্কাইভ বিষয়ক সম্পাদক শুভ্র খান, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সবুজ খান, আইন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক তারিক মুহাম্মদ হাসান, দপ্তর সম্পাদক সাঈদ রহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য দীন মোহম্মদ মন্টু, সৈয়দ আওলাদ, গাজী আপেল মাহমুদ, ফিরোজ আহমেদ দুলাল, শহীদুল ইসলাম রুনু, শাহীন মাহমুদ ও নাসির উদ্দিন মাসুদ সভায় অংশ নেন।