ন্যাভিগেশন মেনু

‘বাল্য বিয়ে থেকে আমাকে বাঁচান’ আকুতি কিশোরীর


‘আমি স্বামীর বাড়িতে যেতে চাই না লেখাপড়া করতে চাই’ বলে আকুতি জানিয়েছে মাদ্রাসা ছাত্রী মিম।

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিজ হাতে লিখিত আবেদন জমা দিয়ে বাল্য বিয়ে থেকে মুক্তি চেয়েছে সে।

যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণ মহিলা আলিম মাদ্রাসার ক্লাস সেভেনের মেধাবী শিক্ষার্থী মিম খাতুন (১৪) । বাবা মা জোর করে বিয়ে দেওয়ায় লেখা পড়া বন্ধ হতে চলছে তার।

শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল জানান, মাদ্রাসা ছাত্রী মিম খাতুন এ ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে যদি কোন অনিয়ম পাওয়া যায় তবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলেয়া পারভীনের কাছে জানতে চাইলে  তিনি জানান, মিম আমার মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী। তার বর্তমান অবস্থার কথা আমি তার মুখ থেকে শুনেছি।

সে স্বামীর সংসারে যেতে চায় না। লেখা পড়া শিখতে চায়। মিম লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। তিনি বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী মিম সাংবাদিকদের কাছে কান্না কন্ঠে জানায়, আমি লেখাপড়া করতে চাই, মানুষের মত মানুষ হতে চাই। তাছাড়া এখন আমার বিয়ের বয়স হয়নি।

বাল্যবিয়ে করে আমি অকালে ঝরে গিয়ে জীবনটাকে শেষ করতে চাই না। কিন্তু আমার পরিবার আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দিছে। আমি স্বামীর বাড়িতে যেতে চাই না। তবুও আমার বাবা মা আমাকে জোর করে স্বামীর সংসারে পাঠাতে চায়।

যেতে না চাওয়ায় আমার উপরে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করছে। তবুও আমি আমার বাবা মায়ের কোন শাস্তি চাই না। আমি চাই আমার বিয়েটা বাতিল হয়ে যাক।

মিম জানায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসা শেষ করে বাড়িতে গিয়ে হঠাৎ জানতে পারি আমাকে বেনাপোল বেড়াতে যেতে হবে। ওখানে যেয়ে জানতে পারি আমার  বিয়ে হবে এখানকার পোড়াবাড়ি নারায়নপুর গ্রামের মুছা গাজীর ছেলে রহমত গাজীর সাথে।

এমন করে হঠাৎ বিয়ে হওয়া এবং তার বিয়ের বয়স না হওয়ায় সে বাল্যবিয়ে করতে না চাইলে কঠোর পিতা মাতা তাকে হুমকি ধামকি আর নানান বাহানায় অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য করে।

কাজী এবং হুজুরদের সমন্বয়ে বিয়ে পড়ানো হয়। বিয়েতে জন্ম নিবন্ধন কার্ড দেখানো হয়েছিলো যেখানে স্পষ্ট অক্ষরে জন্ম তারিখ লেখা ছিলো ১৪-০৯-২০০৫।

হিসাব করলে দেখা যায় মিমের বয়স বিয়ের দিনে ১৪ বছর ৯ দিন। অথচ কাজী সাহেব তার পেশাকে পুঁজি করে কিছু অর্থের লোভে নিজের ঈমান ও আইনকে অপব্যবহার করে বাল্যবিয়ে দেন।

আপডেট নিউজ পেতে ভিজিট করুন - Ajker Bangladeshpost

এস এ / এসএস