ন্যাভিগেশন মেনু

‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই’


বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মায়ানমারের সেনাবাহিনীর কর্তৃক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

মঙ্গলবার (১০ মে) সচিবালয়ে এ বিষয়ক দুই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী। ইউএসএইডের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর (পলিসি অ্যান্ড প্রোগ্রামিং) ইসোবেল কোলম্যান ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম অন মিয়ানমারের (আইআইএমএম) প্রধান নিকোলাস কোয়ামজিয়ানের নেতৃত্বে দুটি প্রতিনিধিদল এ বৈঠক করে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তারা কী বলছে- জানতে চাইলে এনামুর রহমান বলেন, ‘তারা বলছে, পৃথিবীর প্রায় ৫০ লাখ শরণার্থী আছে। এর সঙ্গে ইউক্রেনের প্রায় ৭০ লাখ শরণার্থী যোগ হয়েছে। তারা এদের নিয়ে কাজ করছে। অন্যান্য শরণার্থী শিবিরে যেভাবে কাজ করছে, এখানেও সেভাবে কাজ করবে। দ্রুত তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে তারা চাপ তৈরি করবে।’

তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি ভাসানচরের বিষয়ে অবজার্ভেশন দিয়েছেন। সেটি হলো, জরুরি রোগী হলে ভাষানচর থেকে চট্টগ্রাম অথবা নোয়াখালী পাঠাতে হয়। এজন্য তিনি সেখানে একটি উন্নতমানের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভাসানচরে এখনও জাতিসংঘের এজেন্সিগুলো কার্যক্রম শুরু করেনি। এ বিষয়ে আমি তাদের সহযোগিতা চেয়েছি, যাতে দ্রুত সেখানে ইউএনএইচসিআর, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম কার্যক্রম শুরু করে। ইজোবেল কোলম্যান বলেছেন, কথাটি তাদের বলবেন।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ইউএসএইড সরাসরি সাহায্য দেয় না। তারা ইউএনএইচসিআর ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকে আরও ফান্ড দেবে, যাতে তারা এখানে কাজ করতে পারে। দ্রুত এই সাহায্য দেওয়া হবে, যাতে তারা ভাষাণচরে কাজ শুরু করতে পারে।’

আইআইএমএম-এর প্রধান নিকোলাস কুমিয়ানের নেতৃত্বে আসা প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নিকোলাস কুমিয়ান এসেছেন মিয়ানমার যে নির্যাতন হয়েছে, তার একটি অনুসন্ধান করতে। সেজন্য তিনি আমাদের অনুমতি চেয়েছেন। কক্সবাজারে আমাদের যে ট্রিপল আরসি আছে, তার সহযোগিতা চেয়েছেন। রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে অত্যাচারের বর্ণনা নেওয়ার জন্য তারা আলাদা ভবন চেয়েছেন। আমাদের কক্সবাজারে আইসিসির যে ভবন বানানো হয়েছে, সেটিই ব্যবহার করতে বলেছি।’

‘তারা আরও বলেছে, বিভিন্ন ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলতে গেলে অনেকেই কথা বলতে দেয় না। বিষয়টি যেন ট্রিপল আরসি খেয়াল রাখে এবং সহযোগিতা করে। ক্যাম্পের নেতাদের যেন আমরা মোটিভেট করি, যাতে তারা নির্যাতিতদের কথা বলার সুযোগ দেয়। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তাদের পুরোপুরি সহযোগিতা করার।’

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কথা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে এনামুর রহমান বলেন, ‘নিকোলাসও বলেছে, এটার সমাধান হলো প্রত্যাবর্তন। আমরা যতগুলো অর্গানাইজেশন কাজ করছি, আমাদের মূল লক্ষ্য স্বদেশে তাদের নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা দিয়ে ফেরত পাঠানো। এজন্য তারাও কাজ করছেন। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করতেও তারা কাজ করবেন। মিয়ানমারের সঙ্গেও তারা বসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তারা জানালেন, মিয়ানমার সরকার তাদের সহযোগিতা করেনি বলে এটা সম্ভব হয়নি।’

মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগের কী অবস্থা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা নিয়ে গত মাসেই একটি মিটিং হয়েছে। সেখানে নাগরিকদের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার তালিকাটি গ্রহণ করেছে। বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন। এ পর্যন্ত আমরা ৩৫ হাজার তালিকা দিয়েছি, কতজন তারা গ্রহণ করছে এমন কিছু এখনও পাঠায়নি।’

সবশেষ যদি বলি এখনও উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি আমাদের নেই, বলেন প্রতিমন্ত্রী।

ঘূর্ণিঝড়ের সর্বশেষ অবস্থান বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আজ অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হেনে দুর্বল হয়ে গেছে। বাংলাদেশে আঘাত হানার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।’