ন্যাভিগেশন মেনু

ব্রহ্মপুত্রে চিনের বাঁধ ঘোষণার ২ দিনের মাথায় পাল্টা ঘোষণা ভারতের


সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যেই চিনের ব্রহ্মপুত্রে নদের ওপর বাঁধ নির্মাণ নিয়ে পাল্টা জবাব দিল ভারত। দু’দিন আগে চিন ঘোষণা দিয়েছিল  তিব্বতে ইয়ারলাং জ্যাংবো নদীর ওপর বিশাল বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করেছে দেশটি। বড় এ পরিকল্পনার কথা চিন সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদমাধ্যম জানায়।

এই ইয়ারলাং জ্যাংবো নদীই ভারতের আসাম হয়ে বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র নামে প্রবেশে করেছে। চিনের এই ঘোষণার পর দুদিন গড়াতেই ভারত বলছে, তারাও এ নদে জলাধারের পরিকল্পনা করছে। খবরটি প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

চিনের ঘোষণার পরই ভারতের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, এ প্রকল্পের ফলে সে দেশের একটা অংশে বন্যার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এরপর মঙ্গলবার ভারতের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, অরুণাচল প্রদেশে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ১০ গিগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির কথা ভাবছে তারা।

ভারতের কেন্দ্রীয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে টিএস মেহরা জানিয়েছেন, চীনের জলাধার নির্মাণের ফলে যে প্রভাব পড়বে তার সঙ্গে লড়াই করার জন্যই অরুণাচল প্রদেশে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর জলাধার বানানো প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপর্যায়ে এই নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।

চিনের স্বশাসিত তিব্বত অঞ্চলের উৎসস্থল থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে ইয়ারলাং জ্যাংবো নদী, অরুণাচলে পৌঁছে যার নাম হয়েছে সিয়াং। আসামে প্রবেশ করার পর এই সিয়াংই পরিচিত হয় ব্রহ্মপুত্র নামে এবং যা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

চিনা সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অরুণাচল সীমান্তের কাছাকাছি তিব্বতের মেডগ কাউন্টিতে ব্রহ্মপুত্রের ওপরে এই বাঁধ প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা করেছে সরকার।

এর আগেও ব্রহ্মপুত্রের ওপরে একাধিক ছোট বাঁধ নির্মাণ করেছে বেইজিং। নতুন প্রকল্পে উৎপাদিত জলবিদ্যুতের পরিমাণ বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রকল্প, মধ্য চিনের থ্রি গর্জেস ড্যামের চেয়ে প্রায় তিন গুণ হতে পারে।

নতুন এই বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে চিনের জাতীয় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই। গত সপ্তাহে এক সম্মেলনে দেশটির পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ইয়্যান ঝিয়ং বলেন, “ইতিহাসে এমন প্রকল্পের উল্লেখ নেই। চিনের জলবিদ্যুৎ শিল্পে এ এক ঐতিহাসিক সুযোগ।”

আরও জানান, মূল উদ্দেশ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও পরিবেশ সংরক্ষণ, জাতীয় নিরাপত্তা, জীবন যাপনের মানোন্নয়ন, শক্তি উৎপাদন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইয়ারলাং জ্যাংবো নদীর ওপরে প্রস্তাবিত বাঁধ প্রকল্প বছরে ৬০০ কোটি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে, যা বছরে ৩০০ কোটি কিলোওয়াট কার্বনমুক্ত ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।

এস এস