ন্যাভিগেশন মেনু

মাদরাসা পরিচালকের স্ত্রীর টাকা খোয়া, নির্যাতনের ভয়ে পালানো ৩ ছাত্রী উদ্ধার


জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর দারুত তাক্কওয়া মহিলা মাদরাসার মোহতামিম আসাদুজ্জামানের স্ত্রীর এক হাজার টাকা সম্প্রতি হারিয়ে যায়। মাদরাসার সব শিক্ষক ও অন্য শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় শ্রেণির ওই তিন ছাত্রীকে সন্দেহ করে।

টাকা ফেরত দিতে তাদের চাপ প্রয়োগ করা হয়। কড়া শাস্তির ভয়ে তিন ছাত্রী মাদরাসা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য নিখোঁজ তিন মাদরাসাছাত্রীকে রাজধানীর মুগদাপাড়া থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জামালপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়।গত রবিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে মাদ্রাসার একটি কক্ষের জানালা দিয়ে বাইরে বের হয় তারা। 

হেঁটে ইসলামপুর রেলস্টেশনে পৌঁছায়। তিনজনের কাছে মাত্র ৩৪০ টাকা ছিল। সেই টাকা দিয়ে তারা ট্রেনের টিকিট কাটে। সোমবার ভোরে ট্রেন ছাড়ে। সেটি ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছালে তিন ছাত্রী নেমে পড়ে। ৯, ১০, ১১ বছর বয়সী এই মেয়েগুলোর কাছে আর কোনো টাকাপয়সা ছিল না।

পুলিশ বলছে, বুধবার ইসলামপুর থানা কার্যালয় এলাকার পুলিশ কল্যাণ মার্কেটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়। তাতে ওই তিন ছাত্রীকে হেঁটে ইসলামপুর স্টেশনের দিকে যেতে দেখা যায়। এর সূত্র ধরে জামালপুরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার সুমন মিয়ার নেতৃত্বে একটি পুলিশের দল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় যায়। 

দলটির সদস্যরা কমলাপুর রেলস্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করেন। তাতে ওই তিন ছাত্রীকে স্টেশন থেকে বের হতে দেখা যায়। পরে পুলিশ সদস্যরা কমলাপুর স্টেশনের আশপাশের লোকজনকে তিন ছাত্রীর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। 

একপর্যায়ে রাজা মিয়া নামের এক রিকশাচালক ওই তিন ছাত্রীর হদিস দেন। রাজা মিয়ার বাড়িতেই ছিল তারা। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর শুক্রবার সকালে তাদের ইসলামপুরে ফিরিয়ে আনা হয়।

পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রিকশাচালক রাজা মিয়া ওই ছাত্রীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। তিন ছাত্রীর মধ্যে দুজন ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরিও নিয়েছিল। 

রিকশাচালকের সহযোগিতায় তারা একটি ঘরও ভাড়া করেছিল। মাদরাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলা ছিল উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেনি তারা।

তিন ছাত্রী নিখোঁজের ঘটনার পর মাদরাসার বিষয়ে নানা তথ্য আসছে। ফলে মাদরাসাটির অর্থের জোগানদাতা, সেখানে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হতো কি না, এসব বিষয়ের তদন্ত চলছে। উদ্ধার হওয়া ছাত্রীদের আদালতের মাধ্যমে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

এস এস